ডেঙ্গুর বিস্তার
প্রতিরোধ ও সতর্কতা দুটোই প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ডেঙ্গু ক্রমেই এক আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে। এ রোগের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বড় আকার ধারণ করে জনমনে শঙ্কা তৈরি করেছে। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন দিন ডেঙ্গুতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আরও ৩৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে জুলাইয়ের প্রথম তিন দিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১১৬০। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৪৫৬ জন রোগী। এ আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৫ জন।
ডেঙ্গু ছাড়াও চিকুনগুনিয়া ও করোনারও খবর মিলছে। বড় শঙ্কা হলো ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও করোনা-এ তিন রোগের বিস্তার ঘটতে থাকলে স্বাস্থ্য খাত পড়বে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে। ২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনার ভয়াবহতা এখনো আমাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে। সব মিলিয়ে আমাদের এখন সতর্ক হওয়ার সময়, যাতে ডেঙ্গু ছাড়াও চিকুনগুনিয়া ও করোনার বিস্তার না ঘটতে পারে। ডেঙ্গুর বাহন হলো এডিস মশা। এ মশার জীবনচক্রে কিছু পরিবর্তন এসেছে। এডিস শুধু পরিষ্কার পানিতেই নয়, দূষিত পানিতেও বেঁচে থাকতে সক্ষম। রাতেও সংক্রমণ ঘটায় বলে জানা গেছে। এডিস মশার প্রজনন ঠেকানোর কাজটি কঠিন। এ মশা নির্মূলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আমাদের সচেতন থাকতে হবে যেন ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি না হয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে এডিস মশার প্রজনন ঠেকাতে এবং এ মশা নির্মূলে সর্বাত্মক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।
ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গগুলোর সঙ্গে আমরা পরিচিত হলেও এ রোগের নতুন উপসর্গগুলো এখনো অনেকের অজানা। কাজেই জ্বর শুরু হওয়ামাত্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সমাজের প্রত্যেক নাগরিকই সচেতন না হলে এ রোগের কবল থেকে মুক্ত হওয়া যাবে না। শুধু রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে এডিস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি না, প্রশ্ন উঠছে। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ প্রজাতির মশা প্রতিকূল জলবায়ুর সঙ্গে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে শুরু করেছে। কাজেই এডিসের উৎপাত থাকবে বছরজুড়েই। ডেঙ্গু থেকে মুক্ত থাকতে হলে বছরব্যাপী মশক নিধনের কর্মসূচির সঙ্গে জনসাধারণকেও সদাসতর্ক থাকতে হবে অবশ্যই।
