আরপিও সংশোধনীর উদ্যোগ
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নির্বাচনের প্রধান আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, ১৯৭২’ আরপিও সংশোধনীর খসড়া বৃহস্পতিবার কমিশনের সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ সংশোধনীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘না ভোট’ চালুসহ বড় ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জানা গেছে, কমবেশি অর্ধশত সংশোধনী এনে এ খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সূত্র বলছে, আগামী নির্বাচনে যেসব আসনে একক প্রার্থী থাকবেন, সেখানে ‘না ভোট’ চালুর প্রস্তাবও করা হয়েছে। ওই সংশোধনী পাশ হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ-সদস্য হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, কোনো প্রার্থীর চেয়ে ‘না ভোট’ বেশি পড়লে সেই আসনে আবারও ভোট হবে। এছাড়া, খসড়ায় সংসদ-সদস্য প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতায় সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে সংসদ-সদস্য প্রার্থী হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্নাতক পাশ’ হতে হবে। একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ দুটির বেশি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীন কোনো অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হলে তিনি প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। ইসি যদিও এ সংশোধনী রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত করতে চায়, ইসির আইন সংস্কার কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, নির্বাচনে ‘না ভোট’ চালু করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে। যদিও নির্বাচনে ‘না ভোট’ পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়ার প্রয়োজন দেখছেন না জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বলা বাহুল্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩ সালের সংশোধনীর কারণে নির্বাচন কমিশনের হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমরা দেখেছি, জাতীয়সহ সব নির্বাচনকেই প্রভাবিত করার লক্ষ্যে বিগত সরকার কীভাবে ইসিকে ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছিল। যে সংস্থাটি নির্বাচন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে, যদি তাকেই অকার্যকর করে দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।
নির্বাচনের সময় কোনো অনিয়ম, জোরজবরদস্তি, ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ এলে ভোটকেন্দ্র বা পুরো আসনের ভোটের ফলাফল স্থগিত কিংবা বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে বিগত সরকার ইসির এখতিয়ার খর্বের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ ব্যাপারে আমাদের দ্বিমত থাকলেও আরপিও সংশোধনের নামে বিগত সরকার ইসির ক্ষমতা খর্ব করে, যা ছিল প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের কূটকৌশল। কাজেই আরপিও সংশোধনীতে এবার যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে, সবার মতামতের ভিত্তিতে তা অনুমোদন পেলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আশা করা যেতেই পারে।
