ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঈদ মানেই আনন্দ। তবে কুরবানির ঈদের আনন্দটা যেন একটু অন্যরকম। সাধারণ মানুষের মতো অনেক শোবিজ অঙ্গনের তারকাও কুরবানির হাটে যাবার জন্য ঈদের অপেক্ষায় থাকেন। কুরবানির ঈদকে ঘিরে তাদের মাঝেও এক অন্যরকম আনন্দ কাজ করে। আট তারকার কুরবানি ঈদের স্মৃতি নিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের আয়োজন। লিখেছেন রিয়েল তন্ময়
অনন্ত
ঈদের আনন্দ আসলে ছোটবেলাতেই। বড় হয়ে তো অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। আমারও ছোটবেলায় ঈদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। সেগুলো অনেকবার বলেছি। তবে কর্মমূখর জীবনে যে ঈদগুলো কাটাচ্ছি, যেভাবে পার করছি, সেটাই স্মৃতিতে আটকে থাকে এখন। এগুলোও অনেক সুন্দর। পরিবারের সঙ্গে এখনও কুরবানি করার তৌফিক আল্লাহ দিয়েছেন, এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া। তবে স্পেসিফিকলি ছোটবেলার কথা বলগে গেলে, হাটে গিয়ে গরু দেখা, বাড়িতে নিয়ে আসা, সেটা নিয়ে ঈদের দিন কুরবানি দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা- এগুলোই আসলে ঈদের স্মৃতি।
বর্ষা
ঈদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সবাই ছোটবেলার কথাই বেশি বলেন। কিন্তু আমার মতে বড়বেলায়ও ঈদকে স্মরণীয় করে রাখা যায়। ছোটবেলায় তো অনেক কিছুই ছিল। কিন্তু আমার কাছে ঈদের স্মৃতি হচ্ছে আমার দুই ছেলে যেদিন তাদের বাবার হাত ধরে প্রথমবার ঈদগাহে নামাজ পড়তে যায়, সেই দৃশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমৃত্যু। আর প্রথম যেদিন আমার আরিজ ও আববার কুরবানি দেখে, তাদের সেই উচ্ছ্বাস এখনও আমার চোখের সামনে ভাসে। ভবিষ্যতে হয়তো তাদের জীবনে অনেক ঘটনাই ঘটবে কুরবানি নিয়ে, কিন্তু প্রথম দিনের কথা তাদের মনে থাকবে না, আমি জীবদ্দশায় তাদের সেই আনন্দের কথা স্মরণ করিয়ে দেব।
জাহিদ হাসান
যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই কুরবানির ঈদের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম। কখন বড় ভাইয়ের সঙ্গে গরুর হাটে যাব সেই অপেক্ষা ছিল। কয়েকদিন ঘুরে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরতে কী যে আনন্দ হতো। তবে খানিকটা আতংকে থাকতাম দড়ি ছিড়ে যদি গরু দৌড়ে পালায় কিংবা ক্ষেপে গিয়ে যদি কাউকে গুতো দিয়ে দেয়। এরকম আতঙ্ক ও আনন্দ নিয়েই বাড়ি ফিরতাম। তবে এখন আর সেই আনন্দ নেই। ব্যস্ততায় হাটেও যাওয়া হয় না। কাজের চাপের ক্লান্তি কাটাতেই কেটে যায় ঈদের ছুটির দিনগুলো। তবে চেষ্টা করি ছেলে মেয়েদের নিয়ে হাটে যাবার। ওদের ছেলেবেলায় গরুর হাটের স্মৃতি থাকবে না তা কি হয়।
শবনম বুবলী
ছোটবেলার ঈদ সবসময় অসাধারণ। এটা যে শুধু আমার বেলায় তা নয়, আমি মনে করি আমাদের সবারই শৈশব ছিল মধুর। আমার কাছে দুই ঈদ দুই রকমের আনন্দ দিতো। যেমন রোজার ঈদে রোজা রাখার ব্যাপারটিতে মনে আনন্দ কাজ করতো। কুরবানি ঈদে গরুর হাট, কুরবানি, মাংস রান্না এ বিষয়গুলো ভালো লাগতো। ছোটবেলার ঈদের স্মৃতি বলে শেষ হবে না। সেই দিনগুলো এখন মিস করি। এখন বড়বেলার ঈদ মানে অন্যকে খুশি রাখা। পরিবার পরিজনদের আনন্দই এখন নিজের আনন্দ। ঈদে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে দায়িত্ব পালন করেই তৃপ্তি পাই।
সিয়াম আহমেদ
ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে গরুর হাটে যেতে অনেক ভালো লাগতো। অনেক দেখে শুনে যখন গরু কেনা হতো, সেটির দড়ি ধরে যখন বাড়ি ফিরতাম সে আনন্দ ছিল অন্যরকম। এখনও ঈদ আসলেই তা অনুভব করি। ছোটবেলায় আমার মনে হতো, যদি গরু কেনার টাকা বাবাকে আমি দিতে পারতাম! তাহলে হয়তো আরও অনেক বেশি ভালো লাগত। এখন আমার সেই আশা ও স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। যখন থেকে আমি টাকা উপার্জন শুরু করেছি, তখন থেকেই প্রতি ঈদে কুরবানির গরু কেনার জন্য কিছু টাকা বাবার হাতে আলাদা করে দিয়েছি। এতে আমার অন্য রকম এক আনন্দ লাগে। কিন্তু ছোট বেলার ঈদের সে আনন্দ এখন আর অনুভব হয়না তার।
মেহজাবীন চৌধুরী
ঈদে গরু কুরবানি নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকে। এই বিষয়টি খুব ভালো লাগে আমার কাছে। ছোটবেলায় কুরবানি উপলক্ষে বাসায় গরু-ছাগল কিনে আনার পর থেকেই আনন্দের বাঁধ ভেঙে যেত। কুরবানির ঈদ নিয়ে খুব মজার একটি স্মৃতি রয়েছে আমার। বড়দের কাছে গরুর হাটের নানা গল্প শুনতে শুনতে একবার হাট দেখার খুব ইচ্ছা হলো। চাচাতো ভাইদের কাছে গরুর হাটে যাওয়ার আবদার করলাম। ভাইয়েরা আমাকে নিতে রাজি হলো না। আমি লুকিয়ে তাদের পিছু নিয়েছিলাম। কিন্তু হাটে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে তাদের হারিয়ে ফেলি। ভয়ে হাটে বসে কি কান্না। একসময় ভাইদের খুঁজেও পাই। এসব স্মৃতি মনে পড়লে একা একাই এখন হাসি, আবার সেসব দিনের কথা মনে হলে আনন্দও লাগে। যা এখন আর পাই না। সেই আনন্দ আর নেই।
আজমেরী হক বাঁধন
ছোট বেলায় আমরা নিয়ম করে রোজার ঈদ নানিবাড়ি আর কুরবানির ঈদ দাদাবাড়িতে করতাম। মামাতো, ফুফাতো ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই একসঙ্গে হতাম ঈদের সময়। ঈদের জামা-জুতা নিয়ে উত্তেজনার অন্ত থাকত না। তবে কুরবানির ঈদে বাড়িতে গরু নিয়ে আসার পর থেকে সে আনন্দ আরও বেড়ে যেতো। সারাক্ষণ এ গরু নিয়েই ভাইবোনেরা সবাই মহাব্যস্ত থাকতাম। সেসব স্মৃতি এখনও আনন্দ দেয়। এখন তো ঈদ আসা মানে,দায়িত্ব পালন করাটাই মূখ্য। ছোটবেলার আনন্দ কি আর এখন পাওয়া যায়।
ইমরান মাহমুদুল
ছোটবেলার ঈদের আনন্দ এখন আর নেই। আর বিশেষ করে কুরবানি ঈদ আরও বেশি আনন্দ দিতো গরু কেনার বিষয়টি। হাটে যাওয়া গরু কেনা, সেই গরু বাসায় এনে তার যত্ন নেয়া। এ বিষয়গুলো খুব আনন্দের ছিল। এখন ঈদের সেই ম্যাজিকটাই হারিয়ে গেছে। আসলে নব্বইয়ের দশকে ছেলেবেলা কাটানো মানুষেরা অনেক ভাগ্যবান। আর এখন তো আমাদের সময় কাটে ব্যস্ততায়। এখন দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে পারলেই মনে হয় ঈদটা পরিপূর্ণ হয়েছে।
