ইউক্রেনকে না দিয়ে ২০ হাজার অ্যান্টি-ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র অন্যত্র পাঠাল ট্রাম্প প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫, ০৯:০১ পিএম

ভ্লাদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনকে ২০ হাজার অ্যান্টি-ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার মার্কিন প্রতিশ্রুতি থাকলেও এগুলো মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা নিজ দেশের সেনাদের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
ইউক্রেনের
প্রেসিডেন্ট জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের সময় একটি চুক্তি
হয়েছিল। এগুলো রাশিয়ার বহুল ব্যবহৃত ইরানি নকশায় তৈরি শাহেদ ড্রোন প্রতিরোধে ব্যবহারের
জন্য প্রয়োজন ছিল ইউক্রেনের।
মার্কিন
সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের শাহেদ ড্রোন
নিয়ে বড় সমস্যা চলছে। আমরা এই ২০ হাজার অ্যান্টি-শাহেদ ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নির্ভর করেছিলাম।
এটা খুব ব্যয়বহুল নয়, কিন্তু এতে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।
এ
বিষয়ে সোমবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি
স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সেখানে সম্ভাব্য সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিরক্ষা
সচিব পিট হেগসেথ গত বুধবার জরুরি নির্দেশনার মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মধ্যপ্রাচ্যে
পাঠান। একই সঙ্গে তিনি ইউক্রেন প্রতিরক্ষা চুক্তি গ্রুপের সর্বশেষ বৈঠকেও অনুপস্থিত
ছিলেন। ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম কোনো মার্কিন
প্রতিরক্ষা প্রধান এই বৈঠকে অংশ নিলেন না।
এর
আগে হেগসেথ ইউরোপীয় মিত্রদের আহ্বান জানিয়েছিলেন, যেন তারা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তায়
আরও বেশি অবদান রাখে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের মার্চ থেকেই ইউক্রেনকে সব ধরনের
সামরিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে।
এদিকে
সোমবার রাতেও ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। কিয়েভের
বিমানবাহিনী জানিয়েছে, মাত্র এক রাতে ৪৭৯টি ড্রোন ও ২০টি মিসাইল ছুড়েছে রাশিয়া, যা
যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় রাতের হামলা।
কিয়েভ
ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন নতুন করে ১২ থেকে ১৫টি ড্রোন লঞ্চ
সাইট তৈরি করছে। পাশাপাশি রাশিয়ার দৈনিক শাহেদ-এর মতো জেরান ড্রোন উৎপাদনের হার ২১
থেকে বেড়ে ৭০-এ উন্নীত হয়েছে।
ইউক্রেনের
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, আমরা প্রতিদিন হামলার মুখে রয়েছি, মানুষ তা বুঝতে পারে
না। তারা যখন সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা বলছিল, তখনো তারা হামলা বন্ধ রাখেনি।
জেলেনস্কি
দাবি করেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তিতে আগ্রহী নন। তাই শুধুমাত্র
যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক নেতাদের ‘কঠোর চাপ’ প্রয়োগের মাধ্যমেই তাকে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য
করানো সম্ভব। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের যথেষ্ট ক্ষমতা
ও প্রভাব আছে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে আসার।