Logo
Logo
×

একদিন প্রতিদিন

২০ জানুয়ারি: শহীদ আসাদ দিবস

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:১৭ এএম

২০ জানুয়ারি: শহীদ আসাদ দিবস

শহীদ আসাদ, আসাদের রক্তাক্ত শার্ট নিয়ে তাৎক্ষণিক মিছিল, ১৯৬৯ সাল

আজ ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদ দিবস। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এটি তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার দাবি তরান্বিত করতে নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন ছাত্রনেতা আসাদ।

প্রতিবারের মত এবারও সকাল ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মূল ফটকের সামনে নির্মিত শহীদ আসাদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং নরসিংদীতে জেলা পার্টির উদ্যোগে শিবপুরে আসাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়েছে।

এছাড়াও শহীদ আসাদ স্মরণে দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন, শহীদ আসাদের আত্মত্যাগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন আরও গতিশীল হয়।

শহীদ আসাদ ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে পথিকৃৎ। এদেশের ছাত্রসমাজের ১১-দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

শহীদ আসাদের পুরো নাম মোহাম্মদ আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান। ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার ধানুয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

আসাদ ১৯৬০ সালে  শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সালে তিনি এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন।

মূলত ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গণঅভ্যুত্থান ঘটে। তার এই আত্মত্যাগ স্বৈরশাসনবিরোধী চলমান আন্দোলনকে বেগবান করে এবং পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতন হয়।

১৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন দুঃসাহসী ছাত্র আইয়ুব শাসনের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রতিবাদ সভা বের করে পুলিশ ও ইপিআরের বাঁধায় প্রত্যেকেই বন্দি হন।

পরদিন ২০ জানুয়ারি ছাত্রজনতা আবার ১৪৪ ধারা পদদলিত করে অকুতভয়ে পাক পুলিশ-ইপিআরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে। তবে সেদিন ছাত্রজনতার প্রতিবাদের মুখে পাক প্রশাসন পিছু হটতে বাধ্য হয়।

সব বাঁধা অতিক্রম করে বিরাট শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে বেরিয়ে শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিকে যাচ্ছিল। সেই শোভাযাত্রার অন্যতম নায়ক ছিলেন আসাদুজ্জামান।

শোভাযাত্রা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে এলে তাকে গুলি করে পাক পুলিশ। শহীদ হন টগবগে যুবক আসাদ। তারপর পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে বিপ্লবী ছাত্ররা। আসাদের রক্তাক্ত শার্ট নিয়েই তাৎক্ষিণক মিছিল বের করে ছাত্ররা। প্রবলভাবে বিস্ফোরিত হয় ৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান।

কবি শামসুর রাহমানের ভাষায়, ‘গুচ্ছ গুচ্ছ করবীর মতো কিন্তু সূর্যাস্তের জ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের শার্ট উড়ছে হাওয়ায় নীলিমায় উড়ছে, উড়ছে অবিরাম আমাদের হৃদয়ে রৌদ্র-ঝলসিত প্রতিধ্বনিময় মাঠে চৈতন্যের প্রতিটি মোর্চায়।’

আসাদ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম