ফ্রান্সজুড়ে তীব্র তুষারপাত, প্যারিসসহ একাধিক শহরে উচ্ছ্বাস
হাসান ইলিয়াছ তানিম, প্যারিস (ফ্রান্স) থেকে
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
ফ্রান্সে মৌসুমের প্রথম তুষারপাতকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে শীতের রূপময় পরিবেশ। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফ্রান্সে মৌসুমের প্রথম তুষারপাতকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে শীতের রূপময় পরিবেশ। স্থানীয় সময় শনিবার (২২ নভেম্বর) মধ্যরাতের কিছু আগে শুরু হওয়া এ তুষারপাত রোববার গভীর রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরামবিহীনভাবে চলতে থাকে। রাজধানী প্যারিসে এক থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বরফ জমে পুরো শহর সাদা আস্তরণে ঢেকে যায়।
শুধু প্যারিসই নয়—লিওঁ, স্ট্রাসবুর্গ, ডিজন, রেঁস, লিল, নঁতের মতো আরও বেশ কয়েকটি শহরেও একই সময়ে তুষারপাত হয়। উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় তুষারপাত আরও ঘন হওয়ায় বাড়তি সতর্কতা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।
প্যারিস ও আশপাশের ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলে রাস্তাঘাট, উদ্যান, গির্জা, পর্যটনকেন্দ্র সবই ঢেকে যায় সাদা বরফে। আইফেল টাওয়ারের পাদদেশ, অ্যাভিনিউ শঁজেলিজে এবং সাক্রে কুর ব্যাসিলিকার চারপাশে রাতভর তুষারপাত পর্যটক ও প্রবাসীদের জন্য বিরল অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।
লিওঁ শহরের পুরাতন কোয়ার্টার, লিলের গ্র্যান্ড প্লাস এবং স্ট্রাসবুর্গের বিখ্যাত ক্রিসমাস মার্কেট এলাকাও তুষারের পরতে পরতে যেন উৎসবের নতুন রূপ পায়। এ শহরগুলোতে অনেক পরিবার শিশুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ে বরফে খেলা করতে। পর্যটকরা ভিডিও ও ছবি তুলে উপভোগ করেন শীতের সৌন্দর্য।
তীব্র শীত উপেক্ষা করেও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার রাতে বেরিয়ে তুষারপাত উপভোগ করেন। বিশেষ করে প্যারিস, লিওঁ ও লিলে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে ছিল অন্যরকম উচ্ছ্বাস। জমাট বরফে গোলা বানানো, স্নো–ম্যান তৈরি, পরিবার নিয়ে ছবি তোলা—সব মিলিয়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
তবে তুষারঝড়ের কারণে রাতের বেলায় যানবাহন চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। কোথাও কোথাও বরফ জমে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং কয়েকটি শহরে গণপরিবহণের সময়সূচিও ব্যাহত হয়।
ফরাসি আবহাওয়া দপ্তর জানায়, শনিবার কয়েকটি বিভাগে কমলা সতর্কতা জারি করা হলেও রোববার সকালে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তা তুলে নেওয়া হয়। তবে আবহাওয়ার অস্থিতিশীলতার কারণে অন্তত ১০টি বিভাগে হলুদ সতর্কতা বহাল রয়েছে।
ফরাসিরা বড়দিনের আগে তুষারপাতকে শুভ লক্ষণ হিসেবে দেখেন। তাই বছরের এ প্রথম তুষারপাত প্যারিস থেকে লিল, লিওঁ থেকে স্ট্রাসবুর্গ—সব শহরের মানুষের মনেই এনে দিয়েছে অনাবিল আনন্দ ও উৎসবের আমেজ।

