বিভক্ত ফোবানায় আগ্রহ নেই প্রবাসীদের
তোফাজ্জল লিটন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ১০:০১ এএম
বিভক্ত ফোবানায় আগ্রহ নেই প্রবাসীদের
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দুই ভাগে বিভক্ত ফেডারেশন অব বাংলাদেশিজ অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার (ফোবানা) তিন দিনব্যাপী ৩৩তম সম্মেলন নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ৩০ আগস্ট থেকে। চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উত্তর আমেরিকায় প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় এই আয়োজনে আগ্রহ হারিয়েছেন প্রবাসীরা।
তিন দশক আগে শুরু হওয়া ফোবানায় একসময় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রনেতারা। সময়ে মলিন হওয়া ফোবানায় কোনো অনুষ্ঠানেই থাকছেন না কোনো সরকারি প্রতিনিধি। এবার লং আইল্যান্ডের নাসাও কলিসিয়ামে হচ্ছে ফোবানা সম্মেলন। অন্যদিকে লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফোবানা কনভেনশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফোবানা বিভক্ত হয়েছে ব্যক্তিস্বার্থ, নেতৃত্বের কোন্দল, অর্থ আত্মসাৎ- এসব কারণে। হয়েছে মামলা-মোকদ্দমা। আদম পাচারের অভিযোগও উঠেছে কোন কোন সময়। এসব নিয়ে প্রবাসীরা ক্লান্ত। তাই বড় বাজেটে দুটি আয়োজন হয়েও তা নিছক নাচ-গানের অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কমিউনিটির মানুষরা। দুই পক্ষের কেউই কত টাকা উঠছে বা কত ব্যয় হচ্ছে তার হিসেব দিতে পারেননি কেউ।
ফোবানায় কোনো সরকারি প্রতিনিধি থাকছেন না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বলেন, আগস্ট শোকের মাস। আমরা এই মাসে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাই না। সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ অনুষ্ঠানে যেতে পারব কি না তা নির্ভর করবে কাজের ওপর।
অন্যদিকে আমেরিকায় বসবাসকারী আক্কাস উদ্দিন নামের একজন নাট্যকর্মী বলেন, একটি ফোবানার মিলনায়তন ভাড়াই তিন দিনে ৩ লাখ ডলার। আরেকটি ফোবানার হল ভাড়ায় ব্যয় হচ্ছে লক্ষাধিক ডলার। আমেরিকায় কোথাও বাংলাদেশিদের কোনো সেন্টার নেই। কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে হল ভাড়া দিয়ে কোনো রেস্টুরেন্ট অথবা স্কুলের অডিটোরিয়ামে করতে হয়। যে টাকা তারা ফোবানার নামে নাচ-গানের অনুষ্ঠান করে ব্যয় করছে তা দিয়ে অনায়াসে একটি সেন্টার করা যেতো।
তিনি আরও বলেন, ফোবানা বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণে কী করছে? কখনো আদম পাচারের অভিযোগ, চাঁদাবাজি করে নিজের পকেট পূর্ণ করার অভিযোগ, নেতৃত্ব নিয়ে পরস্পরের নিন্দা কলহ ছাড়া প্রবাসীদের কোনো কল্যাণে কাজে এসেছে বলে আমি মনে করি না। সর্বনিম্ন ত্রিশ ডলারের টিকিট হলেও দুই পক্ষই তাদের অনুষ্ঠানে দর্শক নেওয়ার জন্য ফ্রি টিকিট দিচ্ছে নানান কায়দায়।
নিউইয়র্ক সিটির অদূরে লং আইল্যান্ডের নাসাউ কলোসিয়ামে ব্যয়বহুল যে ফোবানার আসর বসছে, এর আয়োজক বাংলাদেশি নাট্য সংগঠন 'ড্রামা সার্কল'। এদিকে ৩৩তম ফোবানা কনভেনশন নামে আরেকটি আসর বসছে নিউইয়র্ক সিটির লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে। এর আয়োজক বাংলাদেশি আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি ইন্ক।
কনভেনশন কমিটির আহ্বায়ক ব্যবসায়ী মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। টিকিট প্রায় শেষের পথে। আমরা আশা করছি অন্তত চার হাজার প্রবাসী আমাদের আয়োজন উপভোগ করবেন। তবে কোন খাতে কত টকা ব্যয় হচ্ছে বা কত টাকা উঠেছে তার হিসেব এখন দিতে পারছি না। পরে যোগাযোগ করলে দিতে পারব।
সম্মেলন কমিটির আহবায়ক নার্গিস আহমেদ বলেন, নাসাউ কলোসিয়াম বিশ্বের দশটি বড় ভ্যানুর মধ্যে একটি। আমরা আশা করছি ১০ হাজার বাঙালি অনুষ্ঠান এবং সেমিনার দেখতে আসবেন। ব্যয়ের হিসেব অনুষ্ঠানের পরে দিতে পারব। এখন টাকা উঠছে ব্যয় করছি, নিজের টাকাও খরচ করছি আমরা।
