|
ফলো করুন |
|
|---|---|
লন্ডন প্রবাসী শাহরিয়ার নাফিস খানের ঢাকার মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার বাসায় হামলা করেছে অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্ত। ১০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটে। বাড়ির কয়েকটি জানালার কাঁচের গ্লাস ভাঙ্গে তারা, এ সময় কাগজে মুড়ে একটি চিরকুট ছুড়ে মারে। সেখানে লেখা- ‘শাহরিয়ার লন্ডন থেকে বাংলাদেশে যেদিন ফিরবে সেদিনই লাশ হবে। এয়ারপোর্ট থেকেই ওকে গুম করা হবে, সাবধান।’ এমন ঘটনায় পুরো পরিবার ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।
শাহরিয়ার নাফিস খানের বাবা অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাবো এমন সময় হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ। ঘরের জানালা গ্লাস ভাঙে চুরমার করছে কয়েকজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী। সে সময় একটি চিরকুট ঘরের মধ্যে দুর্বৃত্তরা ছুড়ে মারে। সেখানে আমার একমাত্র ছেলেকে জীবননাশের হুমকি।
তিনি বলেন, এর কয়েকদিন আগে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা আমাকে ফোনে বারবার হুমকি দেয় এবং সাবধান হয়ে যেতে বলে। শাহরিয়ার যেন বাংলাদেশে না আসে। দেশে এলে ওকে দেখে নেয়া হবে। শাহরিয়ার আর লন্ডনে ফিরে যেতে পারবে না। ছেলের মৃত্যু দেখার জন্য তৈরি হতে বলে সন্ত্রাসীরা।
ঘটনাটি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। তবে এর আগেও কয়েকবার শাহরিয়ার নাফিস খান বাংলাদেশে হামলার শিকার হোন। ২০১১ সালে গাড়িতে একদল দুর্বৃত্তের হামলা ঘটনার পর শাহরিয়ার নাফিস খানে বাবা সে সময় নিউমার্কেট থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ তা গাড়ি দুর্ঘটনা উল্লেখ করে মামলা নেয়নি এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি ব্যবহারের অপরাধে গাড়ি জব্দ করার আইন ও ভীতি প্রদর্শন করে। তাই বর্তমান হামলা ঘটনায় মামলা করা নিয়ে পরিবারটি দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন এবং ভীত হয়েছেন।
লন্ডন প্রবাসী শাহরিয়ার নাফিস খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন ছিলাম তখন আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। বর্তমানে লন্ডনে নির্বাসিত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
এ ছাড়াও আমি ফেসবুকে বিএনপির পক্ষে সব সময় ব্লগ পোস্ট করি। বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন সমালোচনামূলক মন্তব্যও পোস্ট করি। সে কারণে হয়তো ঢাকার বাড়িতে এমন হামলা হয়েছে এবং আমার বাবাকে বারবার হুমকি দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। আমাকে গুম করা এবং মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে।
এর আগে ২০১১ সালের ৩০ জুন লন্ডনে বসবাসরত প্রবাসী শাহরিয়ার নাফিস খানের ওপর আজিমপুরে হামলা হয়। সে হামলায় তিনি গুরুতর জখম হোন। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা শাহরিয়ার খানের ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করে। সঙ্গে তার মাথা এবং শরীরে রড, লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি মাথা কেটে গুরুতর জখম হয়েছিলেন। তখন সন্ত্রাসীরা শাহরিয়ারকে দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবার জন্য হুমকি দেন।
সন্ত্রাসীরা গাড়ির সবকটি কাঁচ ভাঙ্গে এবং গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিতে চায়। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের কারণে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর (ঢাকা মেট্রো ক ১১১৪৭৭) মারুতি সুজুকি। পরে শাহরিয়ারকে ধানমন্ডিতে অবস্থিত মেডিনোভা হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রডের আঘাতের ক্ষতে শাহরিয়ারের মাথায় ৮টি সেলাই ও নাকের কার্টিলেজ ভেঙ্গে যাওয়ায় নাকে একটি মাইনর অপারেশন করে মেডিনোভার কর্তব্যরত চিকিৎসক।
শাহরিয়ার খানের ব্যবহৃত গাড়িটি তার মামা সাংবাদিক একেএম জাকারিয়ার বলে জানা গেছে। দেশে ভাগ্নে বেড়াতে আসায় সাংবাদিক জাকারিয়া তাকে গাড়ি ব্যবহার করতে দেন। তারও আগে ২০০৮ সালে শাহরিয়ার প্রথম হামলার শিকার হোন। পরবর্তীতে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে যান।
