আশুগঞ্জে চিরনিদ্রায় শিক্ষিকা মাসুকা বেগম
যুগান্তর প্রতিবেদন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানী উত্তরার দিয়াবাড়ী মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ভগনিপতির বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্বজনরা জানান, শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপু মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন। বিমান দুর্ঘটনার সময় তিনি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে অবস্থান করছিলেন। গুরুতর আহত হওয়ার পর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সোয়া ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাসুকা বেগম নিপুর বোনের মেয়ে ফাহমিদা খানম হৃদি জানান, খালামণি আমাদের খুবই আদর করতেন। সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। তিনি কখনো কখনো শাসনও করতেন। তবে তার মধ্যেও আদর ছিল। নিহতের পিতা সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমার কন্যার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। আমি আর বেশি কিছু বলতে পারছি না। আমি সবার কাছে দোয়া চাই আমার মেয়ের জন্য। নিহতের ভগনিপতি খলিলুর রহমান জানান, আমার শ্যালিকা খুব বিনয়ী এবং ভদ্র ছিলেন। আকস্মিক এই মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।
নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকুট গ্রামে। তিনি চিলোকুট চৌধুরী বাড়ির সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর কন্যা। তবে তার বৃদ্ধ বাবা, বড় বোন পাপিয়া আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বসবাস করছেন। যার কারণে ওই শিক্ষিকার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী আজ বাদ আসর আশুগঞ্জ সোহাগপুর ঈদগাহে জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি। জানাজায় আশুগঞ্জের বিশিষ্টজনরা অংশগ্রহণ করেন। ভৈরব জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু হানিফা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে সে আমার আদরের ছাত্রী ছিল। শিক্ষা জীবনে মাসুকা অত্যন্ত বিনয়ী এবং মেধাবী ছিল। তার জানাজা পড়তে হবে, সেটা কখনো ভাবিনি। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহজাহান সিরাজ জানান, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় পুরো দেশ স্তব্ধ। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপু দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত।
