Logo
Logo
×

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

একসঙ্গে খেলত পাশাপাশি শুয়ে আছে কবরে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রতিদিনের মতোই সোমবার সকালে একসঙ্গে স্কুলে গিয়েছিল আরিয়ান, বাপ্পি ও উমায়ের। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এই তিন শিক্ষার্থী ক্লাস শেষে প্রস্তুতি নিচ্ছিল কোচিংয়ের। ক্লাস ও কোচিং শেষ করে ফেরার কথা ছিল ঘরে। বাবা-মায়ের বুকে। তাদের আর বই খাতা নিয়ে স্কুল ড্রেস পরে ঘরে ফেরা হয়নি। ফিরেছে, তবে লাশ হয়ে। হাসিখুশি কোমলমতি শিশুর দেহ স্বজনদের কাছে পৌঁছেছে অঙ্গার হয়ে। একসঙ্গে খেলত তিন শিক্ষার্থী। এখন তারা শুইয়ে আছে পাশাপাশি কবরে। কী বেদনার। কী যন্ত্রণার এই দৃশ্য তা শিশুদের বাবা-মা ছাড়া অন্য কারও বোঝার কথা না।

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এই তিন শিশুর প্রাণও ঝরে যায়। তারা একই বংশের। দিয়াবাড়ির তারারটেক মসজিদ এলাকায় একসঙ্গেই বেড়ে ওঠা এই শিশুদের মৃত্যুও একই ঘটনায়। আবার একসঙ্গে হয় তাদের জানাজা ও কবর।

মঙ্গলবার ওই এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে মিলল শোকের আবহ। দুদিন আগেও যে আঙিনায় একসঙ্গে খেলাধুলায় মেতে থাকত এই শিশুরা, সেখানেই আজ পাশাপাশি কবরে শায়িত। চোখের পানিতে পরিবারের কনিষ্ঠ তিন সদস্যকে বিদায় জানাল স্বজনরা। পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ। অঝোরে কেঁদেছেন বন্ধু, সহপাঠী আর প্রতিবেশীরাও। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে উমায়েরের মা কান্না করতে করতে পাগলপ্রায়। তিনি এখন সন্তানের স্কুল ড্রেস ও তার ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়ে ঘ্রাণ নিচ্ছেন।

সন্তানের বিলাপ ধরে মা কান্না করতে করতে বলেন, আম্মু বিরানি দিলে সঙ্গে একটা কুক দিও। সকালে নিজ হাতে খাবার খেয়ে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন সন্তানকে। উমায়েরের চাচাতো ভাই বাপ্পিও একই শ্রেণিতে পড়ে। তাদের পরিবারের সদস্য ছিল চর্তুথ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিয়ান।

উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শাখায় বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ইতোমধ্যে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন। সেই দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম