সাক্ষাৎকার
গুণগতমানে আপস করে না দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো: মো. হুমায়ুন কবীর
উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মো. হুমায়ুন কবীর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যুগান্তর : গৃহস্থালি কাজের বাইরে কোথায় কোথায় রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার বেশি ব্যবহার হচ্ছে?
হুমায়ুন কবীর : বর্তমানে দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারই রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের দোকান, সুপার শপ, রেস্তোরাঁ-ক্যাফে, মাছ-মাংস বিক্রেতা, দুগ্ধ ও বেকারি শিল্প, হাসপাতাল, ওষুধ সংরক্ষণাগার, গবেষণাগার এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিসহ সবাই রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করে।
যুগান্তর : দেশি ব্র্যান্ডের রিফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের গুণগতমান কেমন?
হুমায়ুন কবীর : এখন দেশীয় ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিগুলো আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চগুণগতমানের রেফ্রিজারেটর উৎপাদন এবং বাজারজাত করছে। ফলে বিদেশি ফ্রিজের প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে অনেকাংশেই কমে এসেছে। কারণ গুণগতমানে কোনো আপস না করে দেশীয় রেফ্রিজারেটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে টেকসই পণ্য সাধারণ ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। ফলে এসব পণ্যের চাহিদা ক্রমাগত দ্রুততম হারে বাড়ছে।
যুগান্তর : দেশি ব্র্যান্ডের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটা কীভাবে দেখছেন?
হুমায়ুন কবীর : দেশীয় রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের গুণগতমান বিদেশি ব্র্যান্ডের সমকক্ষ এবং দামে তুলনামূলক সাশ্রয়ী এবং টেকসই। অন্যদিকে বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্যের মতো উচ্চ আমদানি শুল্ক না থাকায় দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর দাম মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে যা লো-ভোল্টেজেও চলতে পারে। একই সঙ্গে দেশে উৎপাদিত ফ্রিজ ও ফ্রিজার বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এবং টেকসই হওয়ায় ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
যুগান্তর : শহর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে চাহিদা কেমন?
হুমায়ুন কবীর : ফ্রিজসহ নানা ধরনের ঘরোয়া ইলেকট্রনিক্স পণ্য এখন ঢাকার বাইরে বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের মোট বিক্রির প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ বিক্রি এখন ঢাকার বাইরে।
যুগান্তর : বিক্রয়োত্তর সেবা কীভাবে দিয়ে থাকেন?
হুমায়ুন কবীর : দেশব্যাপী বিস্তৃত আমাদের সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় বিক্রয়োত্তর সেবা দেশব্যাপী প্রদান করা হচ্ছে, এমনকি সাপ্তাহিক এবং সরকারি ছুটির দিনেও বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করছি।
যুগান্তর : উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রয়োগ কতটা ঘটান?
হুমায়ুন কবীর : আমাদের গবেষণা ও উন্নয়ন টিম প্রতিনিয়ত বাজার বিশ্লেষণ, ভোক্তার রুচি-পছন্দ এবং প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলো পর্যালোচনা করে নতুন নতুন ফিচার, ডিজাইন ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রয়োগ ঘটাচ্ছে।
যুগান্তর : দেশে এখন রেফ্রিজারেটরের বাজার কত বড়?
হুমায়ুন কবীর : পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে ফ্রিজের বাজার এখন প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যার বার্ষিক চাহিদা ৩৫ লাখ ইউনিটেরও বেশি। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশে ফ্রিজের বাজারের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে।
যুগান্তর : অনেক সময় দেখা যায়, রেফ্রিজারেটরে খাবার রাখলে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। এটার সমাধান কী?
হুমায়ুন কবীর : মিনিস্টার রেফ্রিজারেটরে 6A কুলিং সিস্টেম, ন্যানো হেলথকেয়ার টেকনোলজি এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ডোর গ্যাসকেট থাকায় মিনিস্টার রেফ্রিজারেটরে খাবার থাকে সতেজ, ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসমুক্ত।
যুগান্তর : কোন প্রযুক্তির রেফ্রিজারেটর-ফ্রিজার বিক্রি বেশি?
হুমায়ুন কবীর : বর্তমানে ইনভার্টার প্রযুক্তির বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ফ্রিজ ও ফ্রিজারগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতারা ফ্রিজ ও ফ্রিজার ক্রয়ের আগে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা শেষে কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন-উন্নতমানের কম্প্রেসার, বিল্ট-ইন ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রযুক্তি, ন্যানো হেলথকেয়ার টেকনোলজি, ওয়াইড ভোল্টেজ রেঞ্জ, কপার কনডেন্সর, ইকো-ফ্রেন্ডলি R600A গ্যাস, ভিটামিন প্রটেক্টিভ টেকনোলজি ইত্যাদি প্রযুক্তি। আমাদের মিনিস্টার ফ্রিজ ও ফ্রিজারে উপরোক্ত সব প্রযুক্তি ব্যবহার করছি এবং আরও নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
