আজ সচিবালয় ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির আশ্বাস
ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধের পর সচিবালয় ত্যাগ অর্থ উপদেষ্টার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভাতার দাবিতে বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ে কর্মরত নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা -যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সচিবালয় ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত কর্মচারীরা ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখার পর বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সচিবালয় ত্যাগ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পুলিশের সহায়তায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে সচিবালয় ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে দাবি আদায়ে এদিন দুপুর আড়াইটা থেকে ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে অর্থ উপদেষ্টাকে সচিবালয়ের ১১ নম্বর ভবনের চতুর্থতলায় নিজ দপ্তরে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মচারীরা।
উপদেষ্টাকে তার দপ্তর থেকে বের করার আগে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট প্রবেশ করে আন্দোলনকারীদের বাঁশি বাজিয়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সচিবালয়ে কর্মরত চাকরিজীবীদের সচিবালয় ভাতার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে আজ।
আন্দোলনকারী একাধিক কর্মচারী জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (আজ) বিকাল ৩টার মধ্যে সচিবালয় ভাতার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এই আশ্বাসে আমরা অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে সরে এসেছি। বুধবার দুপুর আড়াইটার পর থেকে কর্মচারীরা দলবেঁধে এসে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। তারা সচিবালয় ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তারা জানিয়েছেন, সচিবালয় ভাতার গেজেট জারি করা ছাড়া তারা যাবেন না। সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বদিউল কবিরের নেতৃত্বে কর্মচারীরা এ আন্দোলন শুরু করেন। অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে রাখায় তার দপ্তরে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয়। এছাড়া ১১ নম্বর ভবনের নিচেও বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়। তবে সন্ধ্যার পর নিচে থাকা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চতুর্থতলায় গিয়ে অবস্থান নেয়।
অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করা কর্মচারীরা জানিয়েছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাব-সচিবালয় এলাকা দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক ও সরকারি-বেসরকারি পেশাজীবীদের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। ঘন ঘন সমাবেশ, মিছিল ও ঝুঁকিপূর্ণ নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে সচিবালয় কর্মীদের প্রতিদিনই বাড়তি ঝুঁকি ও চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়।
তারা বলেন, অতিরিক্ত সময় কাজ করি, অথচ কোনো ওভারটাইম নেই। বিকাল ৫টার পরও ৮-৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কারণ জরুরি ফাইল, নীতিনির্ধারণ ও সমন্বয়ের কাজ থেমে থাকে না। কিন্তু এ অতিরিক্ত শ্রমের জন্য কোনো ওভারটাইম সুবিধা নেই-যা সচিবালয় ভাতার যৌক্তিকতা আরও স্পষ্ট করে। পক্ষান্তরে রাষ্ট্রপতির বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে টিপটপ ভাতা এবং অতিরিক্ত কাজের জন্য আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে কাজ করেন। গুরুদায়িত্ব, অতিরিক্ত সময়, গোপনীয়তা, ঝুঁকি, বিশেষ ব্যয় ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব- সবকিছু বিবেচনায় ‘সচিবালয় ভাতা’ চালু করা অত্যন্ত যৌক্তিক, স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
