তফসিল ঘোষণার পরই আচরণবিধির প্রয়োগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরই ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার’ প্রয়োগ শুরু করবে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা করবেন। তবে এখনই রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচার শুরু করতে পারবেন না। আচরণবিধিতে ভোটের ২১ দিন আগে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এবার ভোটের প্রচারে পোস্টার ব্যবহার, ড্রোন ওড়ানো ও বিদেশে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দেড় লাখ জরিমানা গুনতে হতে পারে। আর কোনো রাজনৈতিক দল এই বিধান লঙ্ঘন করলে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ যুগান্তরকে বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পরই আচরণ বিধিমালার প্রয়োগ শুরু হবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার সব চেষ্টা করা হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা ও আইন মানার প্রবণতা থাকতে হবে।’
ইসি জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর সব ধরনের আগাম প্রচার সামগ্রী অপসারণে স্থানীয় সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এখন থেকে কেউ নির্বাচনি প্রচারে পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা বিলবোর্ডে প্রচার চালাতে পারবেন; যার দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট। বিলবোর্ডে শুধু যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড, সেগুলোতে আলোর ব্যবহার করা যাবে। বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কোনো দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোনো প্রচার করতে পারবেন না। নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ থাকবে না।
আর প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্বর্তীকালীন/তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। তারা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না। প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রচার সামগ্রীতে পলিথিন, রেকসিনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে।
কোনো প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে। তবে কিছু শর্ত যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা দল বা প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। প্রচারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচনসংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সব প্রকার ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না। নির্বাচনি স্বার্থ হাসিল করার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না।
