Logo
Logo
×

শেষ পাতা

হাসিনাকে তৃতীয় দেশে পাঠানোর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হাসিনাকে তৃতীয় দেশে পাঠানোর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় দেশে স্থানান্তরের আলোচনা আছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানে কিনা এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরাও আপনাদের মতো শুনেছি। এটা আমার কিছু করার নেই। বাংলাদেশেরও কিছু করার নেই। আমরা চাই উনি ফেরত আসুক। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাতে রাজি না হলে কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানেই থাকবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই তার ওপর নির্ভর করছে-এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রক্রিয়ায় তৌহিদ হোসেন বলেন, করণীয় তেমন কিছু আসলে নেই। ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠানোর।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি। আন্দোলন দমনে হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গত মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার তাকে ফেরত পাঠাতে অনুরোধ করলেও নয়াদিল্লি কোনো সাড়া এখনো দেয়নি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠাতে ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ।

ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান যে নতুন ব্লক তৈরির কথা বলছে সেখানে বাংলাদেশ চাইলে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে বাদ দিয়ে নেপাল বা ভুটানের পক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রুপিং করা সম্ভব নয়। আমাদের কথা বাদ দিলাম। আমাদের পক্ষে সম্ভব। কিন্তু নেপাল বা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার একটা কথা বলেছেন, কোনো এককালে হয়তো এটার অগ্রগতি হতেও পারে।

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান নিয়ে সম্প্রতি একটি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এটি এ অঞ্চল ও এ অঞ্চলের বাইরের অন্যান্য দেশকে নিয়ে আরও সম্প্রসারিত হতে পারে। ৩ ডিসেম্বর ‘ইসলামাবাদ কংক্লেভ’ ফোরামে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এ মন্তব্য করেছেন।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার, দেখা যাক আমরা কতটুকু করতে পারি। র‌্যাবের কাজে স্পষ্টত অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এটা অনেকে স্বীকার করেন। গত ১৫ বছরে র‌্যাব যা করেছে সে তুলনায় কিছু অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই সরকারের প্রচেষ্টার কোনো অভাব নেই। কারও যেন মানবাধিকার এভাবে লঙ্ঘিত না হয়, কেউ যেন গুম না হয়; কেউ যেন বিচারবহির্ভূত হত্যার স্বীকার না হন-এ ব্যাপারে আমাদের শতভাগ কমিটমেন্ট আছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বাংলাদেশের কোনো শাসকের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনার প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, আসলে আমার তো মনে হয় না এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা আছে। কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি না-এ রকম কোনো অভিযোগ আসছে।

বিগত সরকারের সময় থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানান তৌহিদ হোসেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলছে, গত ১১ মাসে বাংলাদেশে ২৯ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার স্বীকার হয়েছেন। এটা নিয়ে উন্নয়ন সহযোগিতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোনো বার্তা দিচ্ছে কিনা-এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার বিস্তারিত তথ্য আমি বলতে পারব না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম