Logo
Logo
×

সারাদেশ

হাসপাতালে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে ‘শাটডাউন’ স্থগিত, অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন

Icon

হাজারীবাগ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম

১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে ‘শাটডাউন’ স্থগিত, অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন

১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবিতে পূর্বঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত। ছবি: যুগান্তর

১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবিতে পূর্বঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত রেখে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন সারা দেশের সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা।

এর আগে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার এবং ৩০ নভেম্বর দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগ চত্বরে জড়ো হয়ে কর্মবিরতি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। তাদের নেতৃত্ব দেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাঈন উদ্দিন মঞ্জু।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢামেক হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট খাজা মাঈন উদ্দিন মঞ্জু, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব সাইদুর রহমান সিদ্দিকী, বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের মহাসচিব মো. রিপন শিকদার, ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সিকদার মো. জসিম উদ্দিন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের টেকনোলজিস্ট মো. সইবুর রহমান ও মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

নেতারা বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের ফাইলটি দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন। বহুবার দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে ফাইল উপস্থাপন করলেও ‘অজ্ঞাত কারণে’ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন, দাপ্তরিক যোগাযোগ এবং জনপ্রশাসন বিধি শাখার সব দাবি পূরণ করেও ফাইল ফেরত দেওয়া হচ্ছে নানা অজুহাতে। প্রশাসনিক জটিলতা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবেই সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

তাদের দাবি- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা ইতোমধ্যে ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। অথচ একই যোগ্যতা ও একই কাজের পরও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের বিষয়টি ঝুলে আছে। তারা গত ৩০ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন।

নেতারা বলেন, আগামী সোমবারের মধ্যে দাবি মানা না হলে সংবাদ সম্মেলন এর মাধ্যমে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’সহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও করা হবে।

এদিকে অর্ধদিবস কর্মবিরতির কারণে ঢামেক হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি তীব্র আকার ধারণ করে। 

রেডিওলোজি বিভাগ বন্ধ থাকায় এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষা না হওয়ায় রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় রয়েছে। মেডিসিন স্টোরের সামনে ওষুধের জন্য লম্বা লাইন পড়ে গেছে। সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সাধারণ রোগীরা। 

রায়েরবাগ থেকে ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসা শিউলি বলেন, সকালে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকি, তবুও সেবা পাই না। ফার্মাসিস্ট আর টেকনোলজিস্টদের দাবি পূরণ না হওয়ার সঙ্গে আমাদের গরিব মানুষের কী সম্পর্ক? সরকার তাদের সমস্যা মেটাতে না পারলে আমাদের কেন কষ্ট করতে হবে?

আরও কয়েকজন রোগী অভিযোগ করেন, হাসপাতালে এসে কেউ তাদের জানায় না কোন বিভাগ খোলা, কোনটি বন্ধ। ফলে একই জায়গায় বারবার লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রানি হতে হচ্ছে। বৃদ্ধ, শিশু ও আহত রোগীদের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকারও অবস্থা নেই।

আন্দোলনকারীরা বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন, তবে সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ দ্রুত আসতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম