‘ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করতে হবে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, ইসরাইলকে গাজার যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা করতে নিষেধাজ্ঞা ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। সেইসঙ্গে গাজার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে আঙ্কারা প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
তিন দিনের উপসাগরীয় সফর শেষে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় বিমানে করে দেশে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
এরদোগান বলেন, ‘ইসরাইলকে তার প্রতিশ্রুতি মানতে বাধ্য করতে হবে — নিষেধাজ্ঞা ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে। আমরা ইতোমধ্যে এই লক্ষ্য পূরণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং তা অব্যাহত রাখব।’
তিনি বলেন, ‘গাজা টাস্ক ফোর্স’ বিষয়টি নিয়ে বহুমাত্রিক আলোচনাও চলছে, এবং তুরস্ক গাজাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
সম্প্রতি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় তুর্কি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করেছিলেন। এ বিষয়ে এরদোগান বলেন, ‘এই বাহিনীর কাঠামো বা ধরন এখনো নির্ধারিত হয়নি। এর জন্য আমরা প্রাথমিক অবকাঠামোগত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গাজা ইসলামি বিশ্বের জন্য এক বড় পরীক্ষা। গাজার পুনর্জাগরণ একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া সম্ভব নয়। একা তুরস্ক, মিশর বা অন্য কোনো উপসাগরীয় দেশ এটি করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লক্ষ্যেই আমরা সফরকালে প্রতিটি স্থানে বিস্তারিত বৈঠক করেছি। আমি আমার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, গোয়েন্দা প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছি, যাতে আলোচনাগুলো তাদের মাধ্যমে এগিয়ে যায়। এসব যোগাযোগ এখনো চলছে। আমরা উপসাগরীয় দেশগুলোর ভাই-বোনদের কাছে স্পষ্ট আহ্বান জানিয়েছি — এখন কথার নয়, কাজের সময়।’
এরদোগান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘গাজা আবার দাঁড়াবে — কেউ এতে সন্দেহ করবেন না। এজন্য গাজায় অবিরাম মানবিক সাহায্যের প্রবাহ অত্যন্ত জরুরি। আমরা কখনো মিশরে সাহায্য পাঠানো বন্ধ করিনি। সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর পাঠানো ট্রাকভর্তি সাহায্য গাজায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ‘‘১৭তম কাইন্ডনেস শিপ’’ সম্প্রতি এল-আরিশ বন্দরে পৌঁছেছে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে যেসব দেশ ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে সরব ছিল তার মধ্যে তুরস্ক অন্যতম। মানবিক সাহায্য, কূটনৈতিক মধ্যস্থতা এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জবাবদিহির আহ্বান — এই তিনটি নিয়ে কাজ করে আসছে আঙ্কারা।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবিক অভিযানের একটি।
দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ১ লাখ ১ হাজার টনের বেশি সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
এ পর্যন্ত ১৬টি কার্গো জাহাজ ও ১৪টি বিমান খাদ্য, পানি, তাঁবু, কম্বল, স্বাস্থ্যসামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে গাজায় পৌঁছেছে। যার মধ্যে ২৫ হাজার টন খাদ্য, ৩ হাজার টন পানীয় জল এবং ২৪৭ টন চিকিৎসা সরঞ্জাম আছে।
তথ্যসূত্র: ডেইলি সাবাহ


