এই আবহাওয়ায় কেমন হবে শিশুদের ঈদের পোশাক?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১০:১৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঈদ মানেই আনন্দ, আর শিশুদের কাছে ঈদ মানে নতুন পোশাকের হাতছানি। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে শিশুরা এখন থেকেই তাদের নতুন পোশাকের স্বপ্নে বিভোর। তাদের কাছে ঈদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণই হলো নতুন জামাকাপড় পরা। এই উচ্ছ্বাস যেন আর কিছুতেই মেলে না।
ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকেই শিশুদের চোখে মুখে এক ভিন্নরকম ঝলক দেখা যায়। তারা তাদের পছন্দের রঙ ও ডিজাইনের পোশাক নিয়ে কল্পনার জগতে ভেসে বেড়ায়। কে কী পরবে, কার পোশাকে কী ধরনের কাজ থাকবে, তা নিয়ে চলে নিজেদের মধ্যে খুনশুটি আর মজার আলোচনা। বাবা-মার সঙ্গে শপিংয়ে গিয়ে নিজের হাতে পোশাক পছন্দ করার মজাই যেন অন্যরকম। ঝলমলে আলোয় ভরা দোকানে ঘুরে ঘুরে নিজেদের জন্য সেরা পোশাকটি বেছে নেওয়ার এই প্রক্রিয়াটাই শিশুদের কাছে এক বিশাল উৎসব।
এবারের কোরবানির ঈদের আর মাত্র দু’দিন বাকি। এই ঈদটি যেহেতু গ্রীষ্মকালের শেষদিকে আবার বর্ষার আগমনের শুরুতেই হচ্ছে, তাই শিশুদের পোশাকের ক্ষেত্রে আরাম এবং সহজ চলাচল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে ঈদের উৎসবের আমেজও যেন থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
বর্তমানে প্রকৃতিতে প্রচণ্ড গরমে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, আবার ক্ষণে ক্ষণে মেনে আসছে বৃষ্টির ধারা। এই সময় ঈদ পোশাকে আরামদায়ক কাপড়কেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তাই প্রথম পছন্দেই রয়েছে সুতি পোশাক। পাশাপাশি থাকছে ভিসকস, লিনেন ও নানা ধরনের রেশমি কাপড়ের পোশাক।
শিশুর ঈদ পোশাক উজ্জ্বল রঙের হলে উৎসবের আমেজ পাওয়া যায়। তাই বাহারি ডিজাইনের সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের কম্বিনেশন রাখা হয়েছে শিশুদের পোশাকে। আরও থাকছে ফুল ও নকশার মোটিফের পাশাপাশি স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি কাজ।
শিশুদের ঈদের পোশাকের জন্য কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো:
কাপড় কেমন হবে?
সুতি: গরমে সুতি কাপড়ের কোনো বিকল্প নেই। এটি ঘাম শোষণ করে এবং শিশুকে সারাদিন আরাম দেয়।
লিনেন/মসলিন: এগুলোও হালকা ও আরামদায়ক, যা গরমে শিশুদের জন্য খুব ভালো।
হালকা সিল্ক বা ক্রেপ সিল্ক: যদি একটু জমকালো পোশাক চান, তাহলে হালকা সিল্ক বা ক্রেপ সিল্ক বেছে নিতে পারেন। তবে এটি যেন খুব ভারি বা আঁটসাঁট না হয়।
সিন্থেটিক এড়িয়ে চলুন: সিন্থেটিক বা ভারি কাপড় গরমে শিশুর অস্বস্তি বাড়াবে, তাই এগুলো বাদ দেওয়া ভালো।
রং কেমন হবে?
উজ্জ্বল ও হালকা রং: হালকা এবং উজ্জ্বল রং যেমন - সাদা, অফহোয়াইট, বেবি পিংক, হালকা নীল, সবুজ, কমলা, হলুদ বা প্যাস্টেল শেডের রংগুলো গরমে শিশুর জন্য আরামদায়ক হবে এবং দেখতেও সুন্দর লাগবে।
গাঢ় রং এড়িয়ে চলুন: গাঢ় রং তাপ শোষণ করে, ফলে গরমে অস্বস্তি হতে পারে।
পোশাকের ধরন কেমন হবে?
মেয়ে শিশুদের জন্য:
ফ্রক: সুতির ফ্রক, নেট বা কটনের ফ্রক খুব আরামদায়ক। হালকা নকশা বা প্রিন্টের ফ্রক দেখতে ভালো লাগে।
স্কার্ট ও টপ: লম্বা বা ছোট স্কার্টের সাথে আরামদায়ক টপ বা কুর্তি পরাতে পারেন।
সালোয়ার-কামিজ: ব্লক বা এমব্রয়ডারি করা সালোয়ার-কামিজও পরাতে পারেন। এক্ষেত্রে কাপড় যেন সুতির হয়।
ঘাগরা-চোলি/লেহেঙ্গা: যদি একটু জমকালো পোশাক চান, তাহলে হালকা ও আরামদায়ক কাপড়ের ঘাগরা-চোলি বা লেহেঙ্গা বেছে নিতে পারেন।
ছেলে শিশুদের জন্য:
পাঞ্জাবি-পায়জামা: সুতির পাঞ্জাবি-পায়জামা ঈদের দিনের জন্য সেরা পছন্দ। হালকা কাজ বা প্রিন্টের পাঞ্জাবি ভালো লাগবে।
শার্ট-প্যান্ট: হাফহাতা বা ফুলহাতা সুতির শার্টের সাথে জিন্স বা গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট পরাতে পারেন।
ফতুয়া/টি-শার্ট: আরামের জন্য ফতুয়া বা টি-শার্টও ভালো বিকল্প। মজার কোনো কার্টুন চরিত্র বা লেখা থাকলে শিশুরা আরও পছন্দ করবে।
কটি: একরঙা পাঞ্জাবির সাথে স্টাইলিশ কটি পরিয়ে দিলে ঈদের সাজে ভিন্নতা আসবে।
অন্যান্য টিপস:
ঢিলেঢালা পোশাক: আঁটসাঁট পোশাক শিশুদের অস্বস্তির কারণ হয়, তাই ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন।
পোশাকের মাপ: শিশুর মাপ অনুযায়ী পোশাক কিনুন, খুব বড় বা খুব ছোট পোশাক পরাবেন না।
মোটিফ ও ডিজাইন: শিশুদের পোশাকে কার্টুন চরিত্র, পশুপাখি বা ফুলেল নকশা বেশ জনপ্রিয়। হালকা সুতা, পুঁতি বা সিকুইন কাজের ডিজাইনও সুন্দর দেখায়।
অ্যাকসেসরিজ: পোশাকের সঙ্গে মানানসই টুপি, ছোট ব্যাগ, হালকা গয়না বা সুন্দর জুতা বেছে নিতে পারেন, যা ঈদের সাজকে আরও জমকালো করে তুলবে।
শিশুর পছন্দ: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিশুর পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া। তাদের পছন্দের রঙ বা ডিজাইন বেছে নিতে উৎসাহিত করুন, এতে তারা নতুন পোশাকে আরও বেশি খুশি হবে।
এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে কোরবানির ঈদে আপনার শিশু আরামদায়ক এবং স্টাইলিশ পোশাকে ঈদ উদ্যাপন করতে পারবে।
