মূল্যায়নে শীর্ষে দেশের দুই বিমানবন্দর, বেবিচকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ বছর আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি, ইউকে) পরিচালিত বিমানবন্দর মূল্যায়নে সাফল্য অর্জন করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সামগ্রিক মূল্যায়নে ৯৩ শতাংশ এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা (কার্গো) মূল্যায়নে শতভাগ নম্বর পেয়েছে।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও সমানভাবে সাফল্য দেখিয়েছে। এখানে সামগ্রিক মূল্যায়নে ৯৪ শতাংশ এবং কার্গো নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শতভাগ নম্বর অর্জিত হয়েছে। ডিএফটির পরিদর্শকরা বেবিচকের প্রস্তুতি ও কার্যক্রমে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বেবিচক।
রোববার (১২ অক্টোবর) বেবিচকের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা কাওছার মাহমুদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক জানায়, ডিএফটির এয়ারপোর্ট অ্যাসেসমেন্ট হলো যুক্তরাজ্য সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মূল্যায়ন ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বিদেশি বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও কার্গো নিরাপত্তা মানদণ্ড যাচাই করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের অতিরিক্ত নিরাপত্তা চাওয়া মানদণ্ডগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে কি না তা পর্যালোচনা করা হয়। পরিদর্শন কার্যক্রমে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ, নীতিমালা পরীক্ষা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাই করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়মিতভাবে চালু রয়েছে। ২০১৬ সালে কার্গো স্ক্রিনিং নিয়ে উদ্বেগের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য ঢাকাগামী কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এর ফলে রপ্তানি কার্গোতে তৃতীয় দেশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্ক্রিনিং করতে হতো, যা রপ্তানিকারকদের জন্য বিলম্ব ও অতিরিক্ত খরচের সৃষ্টি করেছিল।
এরপর বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আধুনিক ডিটেকশন সিস্টেম সংযুক্ত করে কার্গো নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করেছে। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের কার্গো অপারেশনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বেবিচক ধারাবাহিকভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ এবং প্রক্রিয়াগুলো উন্নত করছে, যাতে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছায়। এই সাফল্য ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি কমাবে, বিদেশি এয়ারলাইন ও হ্যান্ডলারদের আস্থা বাড়াবে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে।
ডিএফটির উচ্চমানের মূল্যায়ন জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা সক্ষম, স্থিতিশীল এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করছে।
বিমানবন্দর মূল্যায়নে এই অসাধারণ সাফল্য বেবিচকের দূরদর্শী নেতৃত্ব, বিমান নিরাপত্তা বিভাগের শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং উভয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যকর নিরাপত্তা বাস্তবায়নের ফল। এটি ধারাবাহিক উন্নতির প্রতি তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
বেবিচক এই সাফল্যকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতে দেশের বিমান নিরাপত্তা আরও উন্নত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এটি শুধু নিরাপত্তা মান বৃদ্ধিই নয়, দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

