পুষ্টিগুণ বেশি কোনটির— ফুলকপি নাকি বাঁধাকপি?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শীত শুরু হতে দেরি নেই। ইতোমধ্যে শীতের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। শহরে না হলেও গ্রামে সকালে শীতের কুয়াশা দেখা যায়।
এই শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। বাজারে চারদিকে চোখ পড়ছে রঙিন সবজির বাহার। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি সবজি হচ্ছে— ফুলকপি ও বাঁধাকপি। দাম সাশ্রয়ী, রান্নায় বহুমুখী আর দারুণ স্বাদে কেউ কারও চেয়ে কম নয়। এখন প্রশ্ন হলো— ফুলকপি না বাঁধাকপি পুষ্টিগুণে কে এগিয়ে?
চলুন জেনে নেওয়া ফুলকপিতে কোন পুষ্টিগুণ আছে—
এক কাপ বা প্রায় ১০০ গ্রাম কাঁচা ফুলকপিতে থাকে প্রায় ২৫–৩০ ক্যালোরি, প্রোটিন ২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৫ গ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম, ভিটামিন সি ৫১ মিলিগ্রাম এবং ফোলেট ৬০ মাইক্রোগ্রাম।
ফুলকপি ফোলেটের ভালো উৎস, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে কোলিনও থাকে, যা মস্তিষ্কের কোষের কার্যক্রমে সহায়ক। কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি কম থাকায় ওজন কমাতে বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ফুলকপি ভীষণ উপকারী।
অন্যদিকে বাঁধাকপিতে আছে— এক কাপ কাঁচা বাঁধাকপিতে থাকে প্রায় ২০–২৫ ক্যালোরি, প্রোটিন ১.৫ গ্রাম, ফাইবার ২.৫ গ্রাম, ভিটামিন সি ৪০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম।
এখন দেখার বিষয় পুষ্টিগুণে কে এগিয়ে— ফুলকপি নাকি বাঁধাকপি?
বাঁধাকপি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও গ্লুকোসিনোলেটসমৃদ্ধ, যা শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। বিশেষ করে লাল বা বেগুনি বাঁধাকপিতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক উপাদান থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী ও প্রদাহ কমায়।
দুটি সবজিই ক্রুসিফেরাস পরিবারের সদস্য। অর্থাৎ ব্রকলি ও শালগমের মতো ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। আর ফুলকপিতে কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি কম। তাই ওজন কমানোর ডায়েটে এটি সেরা বিকল্প। অন্যদিকে বাঁধাকপিতে ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি, যা হজমে সহায়তা করে এবং শরীরের প্রদাহ কমিয়ে দেয়।
দুই সবজিই শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। একটি ওজন কমাতে সহায়ক। অন্যটি রোগপ্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই শীতের মৌসুমে দুটোই নিয়মিত রাখুন আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। একদিন ফুলকপির ভাজি, আরেকদিন বাঁধাকপির সালাদ। তবে ফুলকপি ও বাঁধাকপি যতই স্বাস্থ্যকর হোক, সবার জন্য সমান উপযোগী নয়। কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থায় এ দুই সবজি খেলে সমস্যা বাড়তে পারে।
ফুলকপি ও বাঁধাকপি যাদের খাওয়া উচিত নয়
১. থাইরয়েড সমস্যা
ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে থাকে গয়োট্রোজেনিক নামক উপাদান, যা থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে কাঁচা অবস্থায় বেশি খেলে সমস্যা বাড়ে। তাই থাইরয়েড রোগীরা এগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ করে, তবেই সীমিত পরিমাণে খেতে পারেন।
২. গ্যাস ও পেটফাঁপা
এ দুই সবজিতে ফাইবার ও সালফার যৌগ থাকে, যা হজমে ধীর এবং গ্যাস তৈরি করতে পারে। যাদের আগে থেকেই গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে, তাদের জন্য ফুলকপি ও বাঁধাকপি অস্বস্তিকর হতে পারে।
৩. কিডনি রোগী
ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে পটাশিয়াম ও ফসফরাস থাকে। কিডনির সমস্যা থাকলে শরীর থেকে এই খনিজ বের হতে সময় লাগে্ ফলে রক্তের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই কিডনি রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই সবজি খাওয়া উচিত নয়।
৪. রক্তজনিত সমস্যা
বাঁধাকপিতে থাকে প্রচুর ভিটামিন কে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। তাই যারা রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ খান, তাদের জন্য এটি বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে।
