সাফল্যের পথে
গোল্ড মেডেলিস্ট নামিয়া রওজাত নুবালা
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ছোটবেলা থেকেই একটু বই পড়া, কোডিং, গণিত চর্চার প্রতি নামিয়া রওজাত নুবালার প্রচুর আগ্রহ। এগুলো নিয়ে পড়ে থাকতে সে ভালোবাসে। আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডের ২৬তম আসরে তিনটি থিমের মধ্যে সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন করার কাজে ব্যবহারের জন্য ৫টি রোবট তৈরি করেছে সে। যেগুলো সমুদ্রতটের ময়লা সংগ্রহ, অতিরিক্ত বালি অপসারণ, কেমিক্যাল প্রস্তুত করে সৈকত পরিচ্ছন্ন করে; একইসঙ্গে কাগজ, প্লাস্টিক, কাচ চিনে তা আলাদা করে নির্দিষ্ট বিনে রাখতে সক্ষম এবং সেগুলো রিসাইকেল করে মোল্ডে পরিণত করতে পারে। ফিজিক্যাল রোবটের এমন মুনশিয়ানা দেখিয়ে তার তৈরি ভিডিওটি তাক লাগিয়েছে বিচারকদের। ফলে বিচারকরাও তাকে নিরাশ করেনি। হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নামিয়া রওজাত নুবালা ক্রিয়েটিভ মুভি ক্যাটাগরির সিনিয়র গ্রুপে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। শুধু স্বর্ণই নয়, ফিজিক্যাল কম্পিউটিংয়ে বড়দের ‘সিরিয়াসলি ক্লুলেস’ দলের সদস্য হিসাবে ব্রোঞ্জও পেয়েছেন তিনি। মো. আশরাফুল আমিন ও আফসানা আশিকা দম্পতির একমাত্র কন্যা। এর মধ্যে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বের ১৯টি দেশ।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য নুবালার অনেক ভাবনা। সে এআই নির্ভর এমন একটি রোবট তৈরি করতে চায়, যা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সুবিধা প্রদান করবে। তাই বলে এর দাম কিন্তু হাতের নাগালের বাইরে থাকবে না। এরই মধ্যে নুবালা শিখে নিয়েছেন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ জাভা ও পাইথন। অংশ নিয়েছেন ঢাবিতে অনুষ্ঠিত বিডিওএসএনের ওয়ার্কশপে। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডের ২৬তম আসরে অংশ নিতে নুবালা সঙ্গে নিয়েছিলেন ১০টি রোবট বানানোর মতো সরঞ্জাম। সেসব দিয়েই প্রতিযোগিতায় দেওয়া মুভিতে সে দেখিয়েছে, কীভাবে অপরিচ্ছন্ন বুসানের সৈকতে পর্যটকের ভিড়ে ঘুরতে শুরু করে অর্থনীতির চাকা।
নুবালা নিজেও ভাবেননি এ প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পাবে। কারণ কাজের সময় কত বাধা-বিপত্তিই না তার সামনে এসেছে। এই যেমন-এডিটিং সফটওয়্যারের মাথা বিগড়ে গেল। অন্য একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করলেও সেটি কাজ করছিল না। নুবালার তখন মাথায় হাত। বুদ্ধি করে মোবাইলের অ্যাপ দিয়ে সমস্যার সমাধান করেন। নিজের পদক পাওয়ার বিষয়ে নুবালা বলেন, ‘প্রথমে আমি এটি বিশ্বাসই করতে পারিনি, এবং মুহূর্তেই আমার মধ্যে গর্ব, উত্তেজনা এবং কৃতজ্ঞতার ঢেউ বয়ে যায়। আমার খুব ভালো লেগেছিল তখন।’
