Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

ফিলিস্তিনিদের নাম-নিশানা মুছে ফেলছে ইসরাইল

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফিলিস্তিনিদের নাম-নিশানা মুছে ফেলছে ইসরাইল

ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞে বিধ্বস্ত পশ্চিম তীর। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিম তীরের ‘ফায়ারিং জোন-৯১৮’ পদ্ধতিগতভাবে ভেঙে ফেলছে ইসরাইল। সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের নাম-নিশানা মুছে ফেলছে দখলদাররা। অধিকৃত অঞ্চলের খালেত আল-দাবা গ্রামটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মে মাস থেকে একাধিক অভিযানের পর গ্রামটির বেশির ভাগই এখন ধ্বংসস্তূপ। বর্তমানে গ্রামে কোনো বাড়ি অবশিষ্ট নেই। এপি।

সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য সংরক্ষিত অঞ্চল ‘ফায়ারিং জোন-৯১৮’। এই অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের জন্য নির্মাণ নিষিদ্ধ থাকলেও দখলদাররা ঠিকই সেখানে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নভেম্বর ২০২১ থেকে, আল-জুন্দি গ্রামে জামিল আল-আমুরের পরিবারকে লাগাতার হয়রানি ও সহিংস আক্রমণ করছে দখলদাররা। তারা আল-আমুরের ছেলেকে গুলি করে আহত করেছে এবং তার গোয়ালে আগুন দিয়েছে। এমনকি আমুরের জমির জলপাই চারা উপড়ে ফেলেছে ইসরাইলি বাসিন্দারা। কিন্তু এ ধরনের কার্যক্রমে তারা কোনো ধরনের সেনাবাহিনী বা পুলিশের পক্ষ থেকে তারা কোনো বাধার সম্মুখীন হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন-খালেত আল-দাবাতে ‘নির্মাণ উপাদানগুলো ফায়ারিং জোন ৯১৮-এর মধ্যে স্থাপন করা হয়েছিল, যা আইন লঙ্ঘন করে’ এবং ‘আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা’ নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি ইসরাইলি বাসিন্দাদের নির্মাণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। মাসাফের ইয়াত্তার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই জানেন এই ফায়ারিং জোনগুলো সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইহুদিবাসীদের বসতি স্থাপনের জন্য ভূমি দখলের একটি কৌশল। তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন, ১৯৭৯ সালেই বলেছিলেন, ‘ফায়ারিং জোনগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই তৈরি। এটি বসতিগুলোর জন্য ভূমি সংরক্ষণ।’ মূলত ১৯৮০-এর দশকে এই ফায়ারিং জোন তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়। এমন পরিকল্পনায় ১২টি গ্রামের বাসিন্দারা উচ্ছেদের আশঙ্কায় রয়েছে। এছাড়া সেখানে ফিলিস্তিনিদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ বা রাস্তা নির্মাণের অনুমতি নেই। অন্যদিকে সেখানেই ১৯৯৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরাইলি বাসিন্দারা ১১টি নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে। আল-হালাওয়ে নির্মাণকাজকে ঘিরে সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়েছে। মাসাফের ইয়াত্তা কাউন্সিল প্রধান নিদাল আবু ইউনিস বলেছেন, ‘ইসরাইলি বাসিন্দাদের নির্মাণকাজ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। বাসিন্দারা নিয়মিতভাবে ফিলিস্তিনি এবং স্কুলছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করে।’ জানা গেছে-ইসরাইলি বাসিন্দারা পশ্চিম তীরের আল-মির্কেজ গ্রামে রাগিব হোশিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স ধ্বংস করে। এমনকি তারা তার কুয়ো থেকে পানিও নিয়ে যায়। এছাড়া একই গ্রামে নারী ও শিশুসহ প্রায় ১৬ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করে সেনারা। বর্তমানে বাসিন্দারা চুরি ও হামলার ভয়ে তাদের ভেড়া চরাতে দিতেও ভয় পাচ্ছেন। আল-ফিখিত গ্রামেও নয়জন দখলদারের হামলায় একজন বাসিন্দা ও দুজন সংহতিকর্মী গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা বাসিন্দাদের মারধর, গালিগালাজ করে, ফোন ভেঙে ফেলে।

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে বৈঠক : গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার ইস্তাম্বুলে বৈঠক করবেন মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। শুক্রবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান শুক্রবার বলেন, যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। এদিকে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনের ‘ঐক্যের প্রতীক’ বারঘৌতির মুক্তির আশা : ফিলিস্তিনিদের ঐক্যবদ্ধ করায় তার ভূমিকার জন্য পরিচিত মারওয়ান বারঘৌতি।

তাকে ফিলিস্তিনি ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ও বলা হয়। বর্তমানে তিনি ইসরাইলি কারাগারে বন্দি আছেন। খুব শিগগিরই তিনি মুক্তি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বিবৃতির দ্বৈত প্রভাবেই এই আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম