এক জীবনে ৫ ধাপে বয়স বাড়ে মস্তিষ্কের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মানুষের মস্তিষ্কের প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এক জীবনে পাঁচ ধাপে বাড়ে মস্তিষ্কের বয়স। এই পরিবর্তনগুলো আসে ৯, ৩২, ৬৬ ও ৮৩ বছর বয়সে। ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করে এ তথ্য তুলে ধরেছেন যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গবেষণার ফলাফল মঙ্গলবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। বিবিসি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়-আমাদের বয়স যখন ত্রিশের কোঠার শুরুর দিকে পৌঁছায়, তখনও আমাদের মস্তিষ্ক কৈশোরে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কেন ভিন্ন ভিন্ন হয়, তা বুঝতে সাহায্য করতে পারে এই গবেষণা। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘নেচার কমিউনিকেশনসেও’ প্রকাশ করা হয়েছে গবেষণাটি। গবেষকদের ভাষ্য, বহু মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যানিং করার কারণেই এখন এ তথ্যটি জানা গেছে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে বয়সের এই শুরু ও শেষ কিছুটা আগে-পরে হতে পারে।
মস্তিষ্কের বয়সের ৫ ধাপ
শৈশব : মানুষের জন্ম থেকে ৯ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্কের শৈশবকাল চলে। এ সময় মস্তিষ্কের আকার দ্রুত বাড়তে থাকে। এ সময়ে মস্তিষ্ক কম কর্মক্ষম থাকে। বলতে গেলে একটি শিশুর মতো কাজ করে। একটি শিশু যেমন নির্দিষ্ট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার বদলে উদ্দেশ্যহীনভাবে পার্কে ঘুরে বেড়ায় বা যেখানে খুশি সেখানে চলে যায়-বিষয়টি ঠিক তেমন।
কৈশোর : মানুষের জীবনের ৯ বছর থেকে হঠাৎই মস্তিষ্কে বড় পরিবর্তন আসা শুরু করে। মস্তিষ্কের বয়সের এ সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা শুরু হওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি থাকে। মানুষ যখন শারীরিকভাবে বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়, তখন মস্তিষ্কেরও কৈশোর শুরু হয়। এক্ষেত্রে দুটির মধ্যে মিল রয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যায়, আমরা আগে যেমনটা ধারণা করতাম, তার চেয়েও বেশি সময় ধরে মস্তিষ্কের কৈশোর থাকে। এ সময় ধারণা করা হতো ১৯ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্কের কৈশোর থাকে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, এটি ত্রিশের কোঠার শুরুর দিক পর্যন্ত চলে।
প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা : কৈশোরের পর আসে মস্তিষ্কের প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা। এ পর্যায় চলে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তিন দশকের বেশি। এ সময়টাতে আগের তুলনায় মস্তিষ্কে পরিবর্তন ধীরে হয়। অ্যালেক্সা মাউসলি বলেন, এ পর্যায়টি বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের একটি স্থির অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বার্ধক্যের শুরু : এ পর্যায় শুরু হয় ৬৬ বছর বয়স থেকে। তবে এ পর্যায়ে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের সক্ষমতা কমে যায় না। এর বদলে মস্তিষ্কের কোষের সংযোগের ধরনে বদল আসে। এ সময় পুরো মস্তিষ্ক একটি একক হিসাবে কাজ করার বদলে এর অংশগুলো আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে। বার্ধক্যের শুরুতে মস্তিষ্ককে সুস্থ মনে হলেও এ পর্যায়ে ডিমেনশিয়া ও উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে শুরু করে।
বার্ধক্যের শেষ ভাগ : মানুষের বয়স ৮৩ বছর হলে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক। বার্ধক্যের শুরুর পর্যায়ের মতো শেষ পর্যায়েও একই ধরনের পরিবর্তন আসে। তবে সেগুলো আরও বেশি স্পষ্ট হয়।
