Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

লাইভে নির্যাতনের পর ৩ তরুণীকে হত্যা, উত্তাল আর্জেন্টিনা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০১ পিএম

লাইভে নির্যাতনের পর ৩ তরুণীকে হত্যা, উত্তাল আর্জেন্টিনা

ছবি: আল জাজিরা

আর্জেন্টিনায় তিন তরুণীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে একটি মাদকচক্র। হত্যার ভয়ঙ্কর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এবং শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

নিহতরা হলেন—২০ বছর বয়সি দুই বোন (কাজিন) মোরেনা ভার্দি ও ব্রেন্ডা দেল কাস্তিয়ো এবং ১৫ বছরের লারা গুতিয়েরেস। 

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ বুয়েনস আয়ার্সের একটি বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পাঁচ দিন আগে তারা নিখোঁজ হয়েছিলেন। 

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী প্যাট্রিসিয়া বুলরিচ পাঁচ আসামিকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় তিন পুরুষ ও দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

‘মাদক-নারীহত্যা’ বলে ক্ষোভ 

প্রতিবাদকারীরা নিহতদের ছবি ও নাম লেখা ব্যানার হাতে পার্লামেন্ট পর্যন্ত পদযাত্রা করেন। ব্যানারে লেখা ছিল—‘এটা ছিল মাদক-নারীহত্যা’, ‘আমাদের জীবন কোনো পণ্য নয়’। মিছিলটি আয়োজন করে স্থানীয় একটি নারীবাদী সংগঠন। 

ব্রেন্ডার বাবা লিওনেল দেল কাস্তিয়ো গণমাধ্যমকে বলেন, নারীদের এখন আগের থেকে আরও বেশি সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, নির্যাতনের কারণে মেয়ের লাশ চিনতে পারেননি তিনি। নিহত দুই কাজিনের দাদা আন্তোনিও দেল কাস্তিয়ো অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে হত্যাকারীদের ‘রক্তপিপাসু’ বলে আখ্যা দেন।  

হত্যাকাণ্ড ও তদন্ত

বুয়েনস আয়ার্স প্রদেশের নিরাপত্তামন্ত্রী জাভিয়ের আলোনসো জানান, তদন্তে জানা গেছে তরুণীদের মাদকচক্রের নিয়ম ভাঙার ‘শাস্তি’ হিসেবে ফাঁদে ফেলে খুন করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর পার্টিতে যাওয়ার কথা বলে একটি ভ্যানে করে তাদের তুলে নেয়া হয়। পরে নির্যাতন ও হত্যার ভিডিও ইনস্টাগ্রামের একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ৪৫ জন দেখেছে বলে পুলিশ দাবি করে।

ভিডিওতে এক গ্যাং লিডারকে বলতে শোনা যায়—আমার কাছ থেকে মাদক চুরি করলে এটাই হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, হত্যার আগে তরুণীদের আঙুল কেটে ফেলা, নখ উপড়ে ফেলা, মারধর ও শ্বাসরোধ করে নির্যাতন করা হয়।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত তিনজন পুরুষ ও দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ বলিভিয়ার সীমান্ত শহর ভিয়াজনে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মূল হোতা বলে সন্দেহভাজন ২০ বছর বয়সি এক পেরুভিয়ান যুবক এখনো পলাতক। 

ভিন্ন মত ও বিতর্ক

এদিকে ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, তাদের তদন্তে এমন কোনো লাইভস্ট্রিমের প্রমাণ মেলেনি। তবে তারা পুলিশকে সহায়তা করছে।

নিহত ব্রেন্ডা ও মোরেনার এক কাজিন ফেদেরিকো সেলেবন জানান, জীবিকার তাগিদে তারা মাঝে মাঝে যৌনকর্মে জড়িত ছিলেন—যা পরিবার জানত না। তবে লারার খালা দেল ভায়ে গালভান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের এলাকায় দারিদ্র্য আছে, কিন্তু লারাকে নিয়ে এসব কথা মিথ্যা।

তিনি আরও বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই। সত্য গোপন করা হোক চাই না। হত্যাকারীদের যেন শাস্তি হয়। আমরা ভীত নই।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম