মাদুরোর আলটিমেটামে দূতাবাস ছাড়ছেন মার্কিন কূটনীতিকরা
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০৭:১৬ এএম
মাদুরো ও গুইদো। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর আলটিমেটামে রাজধানী কারাকাসের দূতাবাস ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেছেন মার্কিন কূটনীতিকরা।
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর মার্কিন কূটনীতিকরা দেশে ফিরছেন। এর আগে তিনি মার্কিন কূটনৈতিকদের ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮ টায় পুলিশ প্রহরায় কূটনীতিকদের গাড়িবহর বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী।
এর আগে ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো গত বুধবার নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র তৎক্ষণাত তাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন মাদুরো। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেন তিনি। সেইসঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদেরকেও ভেনেজুয়েলা ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন মাদুরো।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিভাগও কিছু মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাকে ভেনিজুয়েলা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং মার্কিন নাগরিকদেরকেও ভেনিজুয়েলা ছেড়ে চলে আসার চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তবে শুক্রবার ভেনেজুয়েলায় মার্কিন কূটনীতিকদের দূতাবাস ত্যাগের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে শুক্রবার ইউনাইটেড সোশালিস্ট পার্টির প্রধান মাদুরো জানান, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ‘কথা বলতে প্রস্তুত’।
তাৎক্ষণিকভাবে গুইদো এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। বলেন, তিনি ‘নকল সংলাপে’ অংশ নেবেন না।
বুধবার এ বিরোধীদলীয় নেতা নিজেকে ‘ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করার পরপরই দেশটিতে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পায়, জানিয়েছে বিবিসি।
গুইদো নিজেকে ভেনিজুয়েলার শীর্ষকর্তা ঘোষণা দেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ তাতে সমর্থন জানায়। তবে দেশটির সেনাপ্রধান মাদুরোর সমথর্নে রয়েছেন।
নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার পর গুইদো ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনীকে মাদুরোর পাশ থেকে সরে আসার আহ্বান জানালেও দেশটির সেনাপ্রধান বলেছেন, তার বাহিনী সরকারের সঙ্গেই আছে, থাকবে।
তবে মাদুরোর এমন বিপদে তার পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক, রাশিয়া ও চীন।
২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা তেলসমৃদ্ধ দেশটির সমাজতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জোয়ান গুইদো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার কিছুক্ষণ পর যুক্তরাষ্ট্র তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে তার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে। কানাডা, ব্রাজিল ও কলোম্বিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের মতো হুবহু বিবৃতি দিয়েছে।
ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে এক সমাবেশে মাদুরোর বিরুদ্ধে ক্ষমতা জবরদখলের অভিযোগ করেন গুইদো। পরে অতিমুদ্রাস্ফীতিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জবরদখলের অবসান ঘটাতে প্রেসিডেন্টের সব ক্ষমতা গ্রহণের আমি শপথ নিয়েছি।
গুইদোর ঘোষণা ভেনিজুয়েলাকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে ক্ষমতাসীন সরকারের পাশাপাশি বিরোধীরাও একটি সমান্তরাল সরকার চালাতে পারেন। তবে বিদেশি স্বীকৃতি থাকলেও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকছে না।
এদিকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা এক ভাষণে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মার্কিন সমর্থনে অভ্যুত্থানের অভিযোগ তোলেন মাদুরো। তার অভিযোগ, বিরোধীরা ওয়াশিংটন থেকে সরকার পরিচালনা করতে চাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে- আবার আমরা মর্যাদাও দাবি করছি, তাই না! এখানেও নিজ ভূখণ্ড রক্ষায় লড়াই করার ইচ্ছা আমাদের জনগণের আছে।
