‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে গুজরাটের সুরাটের এক আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। যার জেরে সংসদ-সদস্য পদ খোয়াতে হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। এই নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক চলছে। 

এরই মধ্যে বুধবার সুপ্রিমকোর্টের শুনানির আগেই খোয়া যাওয়া সংসদ-সদস্য পদ ফিরে পেলেন এনসিপি (ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি) থেকে নির্বাচিত ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষদ্বীপের এমপি মহম্মদ ফয়জল। টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাকে পুনর্বহাল করেছে লোকসভার সচিবালয়। এক হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল তার। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জানুয়ারিতে স্বয়ংক্রিয় ভাবে তার পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল।

তবে দিন কয়েকের মধ্যেই তার সাজা স্থগিত করেছিলেন কেরালা হাইকোর্ট। তারপর লোকসভা সচিবালয়ে পদ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন মহম্মদ ফয়জল। কিন্তু তার সে আবেদনে সে সময় সাড়া দেয়নি লোকসভা। তারপরই সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন করেন ফয়জল। মামলা চলছিল।

বুধবার ছিল শুনানি। কিন্তু তার আগেই নাটকীয় ভাবে ফয়জলের সংসদ-সদস্য পদ ফিরিয়ে দিল লোকসভা প্রশাসন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিএম সঈদের এক আত্মীয়কে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন মহম্মদ ফয়জল। এমনই দাবি করে ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার বিচার চলাকালীনই ২০১৯ সালে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন এক নিম্ন আদালত। তার সঙ্গে আরও তিনজনকেও একই সাজা দেওয়া হয়। দুদিন পরই, লোকসভা সচিবালয় থেকে তাকে সংসদে অযোগ্য হিসাবে নোটিশ পাঠায়। ১৮ জানুয়ারি, নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, ২৭ জানুয়ারি লাক্ষদ্বীপে উপনির্বাচন হবে। কিন্তু, ভোটের ঠিক দুদিন আগে, কেরালা হাইকোর্ট ফয়জলের সাজা স্থগিত করেন। নির্বাচন কমিশনও উপনির্বাচন স্থগিত রাখে। 

এই ঘটনার পর দুই মাস পেরিয়ে যায়। কিন্তু, তার সংসদ-সদস্য পদ ফেরায়নি লোকসভা সচিবালয়। এরপরই পদ ফিরে পেতে লোকসভা সচিবালয়কে চ্যালেঞ্জ জানান ফয়জল। ৩০ জানুয়ারি, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। দলীয় এমপির পদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তারও দুই মাস পর লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেলেন ফয়জল।

এই ঘটনা নতুন আশার জন্ম দিয়েছে কংগ্রেস শিবিরেও। নেতারা বলছেন, উচ্চ আদালতে আবেদনের সময় রাহুল গান্ধীর আইনি দল মহম্মদ ফয়জলের ঘটনা উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে পারে। উচ্চ আদালতে আবেদনের জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে রাহুল গান্ধীকে।