Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

তীব্র গরমের কবলে এশিয়া 

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৩, ০৯:৫৪ পিএম

তীব্র গরমের কবলে এশিয়া 

তীব্র গরমের কবলে পড়েছে এশিয়া। বিশ্বের বৃহত্তম এ মহাদেশ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে যেভাবে ফোস্কা পড়া তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে, তাতে ২০২৩ সালে পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন জলবায়ুবিদরা। এল নিনো প্রভাবে শীত শেষ হতে না হতেই তাপমাত্রার পারদ যেভাবে চড়ছে, তা এশিয়ার (উত্তর গোলার্ধ) দেশগুলোর জন্য রীতিমতো অশনিসংকেত বলে মত বিশ্বের জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের।

সোমবার মার্কিন দৈনিক ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে,  রোববার ভিয়েতনামের গড় তাপমাত্রা ছিল ৪৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। তাপমাত্রার প্রভাবে বিদ্যুতের চাহিদায় আকস্মিক উল্লম্ফন এবং তার জেরে ভিয়েতনামে প্রায় ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। প্রতিবেশী দেশ লাওসেও এ দিন রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা ছিল। দক্ষিণপূর্ব এয়িশার অপর দেশ ফিলিপাইনে প্রায় প্রতিদিন তাপমাত্রার সূচক ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে থাকায় স্কুলের সময়ঘণ্টা কমাতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না ফিলিপাইনের দুই প্রতিবেশী থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়াও। গত সপ্তাহে প্রতিদিনই থাইল্যান্ডের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। 
তাপপ্রবাহের কারণে স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। থাই জলবায়ুবিদরা সরকারের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, সামনের তিন বছর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে খরা দেখা দিতে পারে; সরকারের উচিত আসন্ন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। 
খরার আশঙ্কায় আছে মালয়েশিয়াও। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি বছর মালয়েশিয়ায় বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। 

বৈশ্বিক জলবায়ুবিদদের মতে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু হতে যাওয়া এল নিনো আবহাওয়াগত প্যাটার্ন এই দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহের জন্য মূলত দায়ী এবং একে আরও অসহনীয় করে তুলছে মানবসৃষ্ট কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারটি। স্প্যানিশ ভাষার দুই শব্দ ‘এল নিনো’ এবং ‘লা নিনা’র আক্ষরিক বাংলা অর্থ ছোট খোকা ও ছোট খুকী। তবে গত কয়েকশ বছর ধরে এই শব্দ দুটি দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলের জলবায়ুগত অবস্থা বা চক্রকে বোঝানো হয়। এই চক্রের একটি অংশের নাম ‘এল নিনো’ অপরটির নাম ‘লা নিনা’। কোনো কোনো বছর প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় দেশ পেরু, ইকুয়েডর ও চিলির উপকূলে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে এক প্রকার উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। গড়ে প্রতি ৬ থেকে ৭ বছর অন্তর অন্তর বিশেষ এই ব্যাপারটি ঘটে।

এই উষ্ণ স্রোতের কারণে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী শীতল সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বাড়ে। এল নিনোর প্রভাবে প্রশাসন্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা বা অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিবর্ষণও ঘটে থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো। তারপরই আসে ‘লা নিনা’। সে সময় এল নিনোর বিপরীত অবস্থা দেখে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিভিন্ন দেশ।

গরম এশিয়া 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম