Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সোমালিয়ায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘দ্যারিজ’ অ্যাপ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৯ পিএম

সোমালিয়ায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘দ্যারিজ’ অ্যাপ

সোমালিয়ার রাজধানী হারগেইসার বাসিন্দা মিসেস আরতান। তার বসবাস এই অঞ্চলের এক নোংরা বস্তিতে। আগে জোড়াতালি দিয়ে কাঁথা সেলাই করে দিন পার করতেন তিনি। কারণ, খোলা আকাশের নিচে মাটির কুঁড়েঘরের চালা হিসাবে ব্যবহারের জন্য কাঁথাগুলোই সম্বল। 

কখনো কখনো কাপড়ের তৈরি এসব চালা বাতাসে উড়ে যায়। সন্তানসহ অভাব-অনটনে দিন কাটে আরতানের। টাকার অভাবে পড়াশোনা হয়নি। তবে এখন নিরক্ষতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে নতুন এক প্রযুক্তির সন্ধান পেয়েছেন। বিনা মূল্যে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘দ্যারিজ’ অ্যাপ নামে এক আধুনিক প্রযুক্তি। 

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘সহমিয়ে ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে অ্যাপটি তৈরি করা হয়। ‘সহমিয়ে ফাউন্ডেশন’র উদ্যোক্তা ইসমাইল আহমেদ ও হায়াত আর্ত। ইন্টারনেট ব্যবহার ছাড়াই ব্যবহার করা যায় এই অ্যাপ। ব্যবহারকারীদের তথ্যানুযায়ী, এটি প্রায় ৪ লাখ ১০ হাজার মানুষকে আফ্রিকাজুড়ে অফলাইনে লেখাপড়া শেখাচ্ছে। বিবিসি।

‘দ্যারিজ’ অ্যাপটি যেকোনো জায়গায় যেকোনো ব্যক্তির জন্য উচ্চমানের শেখার সুযোগ প্রদান করে। সংস্থাটির মতে, অ্যাপটি মজাদার ও আকর্ষণীয়ভাবে যেকোনো পাঠককে বুঝতে সাহায্য করে। যেকোনো স্মার্টফোনের মাধ্যমে এটি অ্যাক্সেস যোগ্য। ক্রমেই অ্যাপটি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের দক্ষতা এবং সাক্ষরতার ওপর আস্থা বাড়াতে সাহায্য করছে। ইন্টারেক্টিভ গেম, অডিও টিউশন, পুরস্কারের সুযোগ যেকোনো বিষয়কে মজাদার এবং আনন্দদায়ক করে তোলে। 

ইন্টারনেট সংযোগের চ্যালেঞ্জের কারণে অ্যাপটি অফলাইনে কাজ করে। ফলে শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় অধ্যয়ন করতে পারে। সামাজিক সমতা অর্জন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে অ্যাপটি বেশ ভালো কাজ করছে। প্রতিষ্ঠা সংস্থার মতে, নারীদের শিক্ষার প্রতিবন্ধকতায় অ্যাপটি দারুণভাবে কাজ করবে।

লিঙ্গ সমতা আনয়নে অ্যাপটি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। ইতোমধ্যেই ব্যবহারকারীদের শতকরা ৪৭.৭ ভাগ মহিলা এবং ৫২.৩ ভাগ পুরুষ। শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধিতে তাদের প্রতিশ্রুতি চলমান থাকবে-এটাই তাদের দাবি। প্রতিষ্ঠাতা মি. আহমেদ আত্মবিশ্বাসী হয়েই বলেছিলেন, ‘আগে আমাদের নিজেদের মাতৃভাষা শিখতে ক্লাসে যেতে লাগত এবং এখন আমাদের হাজার হাজার ব্যবহারকারী আছে যারা ক্লাসে না গিয়ে তাদের নিজস্ব ভাষায় কার্যকরীভাবে সাক্ষর হতে সক্ষম হয়েছেন।’ শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার পর মিসেস আনতারারও দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা পালটে দেয়েছে। 

তিনি গর্ব করে বলেন, ‘আমি অনুভব করি যে গতকাল যেখানে ছিলাম সেখানে আর নেই। ভবিষ্যতে আমি আমার বর্তমান চাকরির চেয়ে আরও ভালো অবস্থানে যেতে পারব। সফল হওয়ার জন্য আমার দক্ষতা এবং জ্ঞান ব্যবহার করব।’ ক্রমাগত যুদ্ধের অস্থিতিশীলতায় সোমালিয়ায় সাক্ষরতার হার অনেকটাই কম। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের ২০২২ সালের তথ্যানুসারে, প্রতি চারজনে তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক পড়তে ও লিখতে পারে না এবং চারজনের একজন শিশু স্কুলে যায় না। এমতা অবস্থায় এ অ্যাপটি ভবিষ্যতের জন্য বিশেষভাবে সুদূরপ্রসারী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমালিয়া শিক্ষার আলো দ্যারিজ অ্যাপ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম