ইরানে ফের বিক্ষোভ, যে কারণে আটক হন মাহসা আমিনির বাবা
ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে শনিবার। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন দেশটিতে আবারও বিক্ষোভ হয়েছে। তবে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ আয়োজনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনিকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাত দিয়ে আল জাজিরা ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মাহসার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সারা দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, শনিবার মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন ইরানের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহরগুলোতে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে বাধা দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা।
বিক্ষোভের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী তেহরানের একটি প্রধান সড়কে জড়ো হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। এক তরুণ স্লোগান দিচ্ছে ও আশপাশে থাকা গাড়ির ড্রাইভাররা হর্ন বাজিয়ে সমর্থন দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে মোহাম্মাদি নামের একজন দাবি করেন, ইরানের খ্যাতিমান অধিকারকর্মী নার্গেস মোহাম্মাদি ও আরও তিনজন নারী তেহরানের এভিন কারাগারের প্রাঙ্গণে তাদের হিজাব পুড়িয়ে মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করেন।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তেহরানের বাইরে, নারী বন্দিদের রাখা কোয়ারচাক কারগারে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জোর প্রচেষ্টা চালায়। এ সময় সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কুর্দিস হিউম্যান রাইটস বলেছে, বিক্ষোভের সময় কারগারটির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা বিক্ষোভকারী নারীদের মারধর করেছেন। এমনকি গুলিও চালান তারা।
তবে ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনা বলেছে, ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা আসামিরা তাদের পোশাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর কোয়ারচাক কারাগারের একটি ওয়ার্ডে আগুন লাগে। তবে তাৎক্ষণিক আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি।
অধিকার গোষ্ঠী কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (কেএইচআরএন), দ্য ফিফটিন হান্ড্রেড তাসবির মনিটর ও নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) তথ্যমতে, শনিবার ভোরের দিকে পশ্চিম ইরানের সাকেজে শহরের পারিবারিক বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনি। এর পরই তাকে আটক করা হয়। তবে মাহসা আমিনির কবরের পাশে কোনো ধরনের স্মরণসভা বা অনুষ্ঠান না করার সতর্কতা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে আটক করা হয়েছে। পরে ইরনার আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। আর এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব ইস্যুতে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়। এর পরই দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে। মাহসা আমিনির মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক মহল।
অধিকার গোষ্ঠীগুলোর তথ্যমতে, পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে দেশটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পাশাপাশি কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী আহত ও গ্রেফতার হয়েছে। বিক্ষোভ সম্পর্কিত ঘটনায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ইরানের আদালত।
ইরানে ফের বিক্ষোভ, যে কারণে আটক হন মাহসা আমিনির বাবা
অনলাইন ডেস্ক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:৩৪:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে শনিবার। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন দেশটিতে আবারও বিক্ষোভ হয়েছে। তবে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ আয়োজনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনিকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাত দিয়ে আল জাজিরা ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মাহসার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সারা দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, শনিবার মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন ইরানের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহরগুলোতে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে বাধা দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা।
বিক্ষোভের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী তেহরানের একটি প্রধান সড়কে জড়ো হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। এক তরুণ স্লোগান দিচ্ছে ও আশপাশে থাকা গাড়ির ড্রাইভাররা হর্ন বাজিয়ে সমর্থন দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে মোহাম্মাদি নামের একজন দাবি করেন, ইরানের খ্যাতিমান অধিকারকর্মী নার্গেস মোহাম্মাদি ও আরও তিনজন নারী তেহরানের এভিন কারাগারের প্রাঙ্গণে তাদের হিজাব পুড়িয়ে মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করেন।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তেহরানের বাইরে, নারী বন্দিদের রাখা কোয়ারচাক কারগারে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জোর প্রচেষ্টা চালায়। এ সময় সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কুর্দিস হিউম্যান রাইটস বলেছে, বিক্ষোভের সময় কারগারটির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা বিক্ষোভকারী নারীদের মারধর করেছেন। এমনকি গুলিও চালান তারা।
তবে ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনা বলেছে, ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা আসামিরা তাদের পোশাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর কোয়ারচাক কারাগারের একটি ওয়ার্ডে আগুন লাগে। তবে তাৎক্ষণিক আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি।
অধিকার গোষ্ঠী কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (কেএইচআরএন), দ্য ফিফটিন হান্ড্রেড তাসবির মনিটর ও নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) তথ্যমতে, শনিবার ভোরের দিকে পশ্চিম ইরানের সাকেজে শহরের পারিবারিক বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন মাহসা আমিনির বাবা আমজাদ আমিনি। এর পরই তাকে আটক করা হয়। তবে মাহসা আমিনির কবরের পাশে কোনো ধরনের স্মরণসভা বা অনুষ্ঠান না করার সতর্কতা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে আটক করা হয়েছে। পরে ইরনার আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আমজাদ আমিনিকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। আর এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব ইস্যুতে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়। এর পরই দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে। মাহসা আমিনির মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক মহল।
অধিকার গোষ্ঠীগুলোর তথ্যমতে, পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে দেশটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পাশাপাশি কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী আহত ও গ্রেফতার হয়েছে। বিক্ষোভ সম্পর্কিত ঘটনায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ইরানের আদালত।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023