পাকিস্তানের প্রতি ‘সহানুভূতির’ অভিযোগে ভারতে গণগ্রেফতার, আসামে ৮১ জন কারাগারে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০১:০৬ পিএম
কারাগারের প্রতীকী ছবি, ইনসেটে পেহেলগাম হামলার ঘটনাস্থল।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে অন্তত ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এপ্রিলের শেষের দিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরের সবচেয়ে তীব্র সশস্ত্র সংঘাতের পর এ দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
রোববার (১ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এএফপি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি দলের এই প্রভাবশালী নেতা রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতি দেখানো ৮১ জন রাষ্ট্রবিরোধী এখন কারাগারে রয়েছে। আমাদের নজরদারি ব্যবস্থাগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট শনাক্ত করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আসাম পুলিশ বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানায়, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের একজন নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোস্ট করেছিলেন। তবে বাকি গ্রেফতারদের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এপ্রিলের ২২ তারিখে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটকদের ওপর চালানো প্রাণঘাতী হামলার পর ভারতজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক নজরদারি ও দমন শুরু হয়েছে। এটি ছিল ওই বিরোধপূর্ণ মুসলিম-অধিকাংশ অঞ্চলে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হামলা।
নয়াদিল্লি হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও এর পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। পাকিস্তান এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।
এই হামলার পর দুই দেশের মধ্যে ৪ দিনের সামরিক সংঘাত ঘটে, যা ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের পর সবচেয়ে উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব ছিল। ১০ মে উভয় পক্ষ একটি অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়।
অবৈধ অভিবাসন ও বাংলাদেশ সীমান্ত ঘিরে নতুন উত্তেজনা
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, আসাম রাজ্য সরকার ‘অবৈধ অভিবাসন’ রোধেও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। মুসলিম-অধিকাংশ প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের দীর্ঘ ও অনিরাপদ সীমান্ত রয়েছে, যেখানে অভিবাসন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক মাসে আসাম সরকার ডজনখানেক কথিত বাংলাদেশিকে আটক করে সীমান্তে নিয়ে যায় এবং তাদের ‘নো-ম্যানস ল্যান্ড’-এ ঠেলে দেয়। ২৭ থেকে ২৯ মে’র মধ্যে অন্তত ৪৯ জনকে জোরপূর্বক সীমান্ত পার করানো হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এই বিষয়ে এখনো আসাম রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
বাংলাদেশ, যার তিন দিকেই ভারতের সীমান্ত, সাম্প্রতিক এক রাজনৈতিক উত্থান-পতনের পর নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে পড়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেইজিং ও ইসলামাবাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
