Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বিপুল ব্যয়ে নতুন রাজধানী গড়ছে মিশর, যা থাকবে শহরটিতে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১০:৫২ এএম

বিপুল ব্যয়ে নতুন রাজধানী গড়ছে মিশর, যা থাকবে শহরটিতে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী কায়রো থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) পূর্বে মরুভূমির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত মিশরের নতুন প্রশাসনিক রাজধানী ক্রমেই বাস্তবের  রূপ নিচ্ছে। ৭০০ বর্গকিলোমিটার (২৭০ বর্গমাইল) আয়তনের এই নতুন শহরটিতে ৬০ লাখেরও বেশি লোকের বসবাসের ব্যবস্থা থাকবে। মূলত কায়রোর যানজট ও দূষণ নিরসনের জন্য এটি নির্মিত হচ্ছে। 

নতুন রাজধানী নির্মাণ, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে  চীন। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত নির্মাণ সংস্থা, চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ( CSCEC), কেবল নতুন বাণিজ্য শহরের  প্রাথমিক ঠিকাদারই নয়, বরং চীন ও মিশরের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে এটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে।

এটি নির্মাণের জন্য মোট ব্যয় হবে (যার মধ্যে প্রেসিডেন্টের  প্রাসাদ, সংসদ, সরকারি ভবন এবং বিদেশী দূতাবাসের জন্য স্থান অন্তর্ভুক্ত থাকবে) আনুমানিক তিন দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মিশরীয় ইউনিট সিবিডি প্রকল্পের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি প্রোটোকল স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে, যা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীনা কোম্পানিগুলোকে বিশেষ সুযোগ করে দেবে এবং কায়রোকে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের একটি বেল্ট অ্যান্ড রোড গেটওয়ে হিসেবে স্থান দেবে।

সিএসসিইসি'র এক বিবৃতিতে বলেছে, চুক্তির অধীনে নতুন প্রশাসনিক রাজধানীতে সিবিডি'র সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করবে, যা বাসিন্দা, পর্যটক এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মন্বিত নগর পরিষেবা প্রদান করবে। রোববার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত চীনের গৃহায়ন উপমন্ত্রী ডং জিয়াংগুও দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে পারস্পরিক সুবিধার একটি মডেল হিসেবে দেখেন এবং গৃহায়ন, অবকাঠামো এবং নগর-গ্রামীণ উন্নয়নে সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য চীনের ভূমিকা ব্যক্ত করেন।

সিবিডিতে আফ্রিকার সর্বোচ্চ আকাশচুম্বী ভবন, ৩৮৫ দশমিক ৮ মিটার (১,২৬৬-ফুট) আইকনিক টাওয়ার, ১০টি অফিস টাওয়ার, পাঁচটি আবাসিক টাওয়ার এবং চারটি হোটেল রয়েছে, যার প্রধান ঠিকাদার হলো সিএসসিইসি। 

২০২৩ সাল থেকে ৩০ হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মচারী নতুন রাজধানীতে স্থানান্তরিত হয়েছেন, যা প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির তৃতীয় মেয়াদে অভিষেকের পর থেকে মিশরের সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। ব্যাংক সহ বাণিজ্যিক ভাড়াটেরাও সিবিডিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। চীনা কোম্পানিগুলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলের অধীনে বন্দর, মহাসড়ক এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো মেগাপ্রকল্প নির্মাণে ক্রমবর্ধমান অর্থায়ন করছে।

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট পলিসি সেন্টারের ঋণ ডাটাবেস অনুসারে, ২০২৩ সালের মধ্যে, চায়না এক্সিম ব্যাংক এবং অন্যান্য চীনা ঋণদাতাদের একটি কনসোর্টিয়াম সিবিডি নির্মাণের জন্য দুই দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরবরাহ করেছিল। মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের এক অনাবাসী সিনিয়র ফেলো জন ক্যালাব্রেস বলেন, সিবিডি নির্মাণকারী সংস্থাগুলো সহ চীনা সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ব্যবহারিক এবং কৌশলগত উভয় উদ্দেশ্যকেই প্রতিফলিত করে- বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে অগ্রাধিকার এবং স্মার্ট সিটি হিসেবে অ্যাক্সেস। চীন-মিশর সম্পৃক্ততা এমন এক সময় হচ্ছে যখন বেইজিং মিশরে তার বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করছে, বিশেষ করে সুয়েজ খালে। যা ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরকে সংযুক্তকারী একটি প্রধান বৈশ্বিক বাণিজ্য পথ। জেনারেল অথরিটি ফর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফ্রি জোনস অনুসারে, উৎপাদন থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে দুই হাজার ৮০০টিরও বেশি চীনা কোম্পানি মিশরে কাজ করছে, যার বিনিয়োগ ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম