Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে ৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে ৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন বলে সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরাইলকে নিশ্চিত করেছেন। গাজা যুদ্ধের অবসান ও সেখানে প্রায় দুই বছর ধরে আটক থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে ওয়াশিংটন যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, এই সফর তারই অংশ।

আগামী ৭ জুলাইয়ের এই সফর হবে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের পর নেতানিয়াহুর তৃতীয় ওয়াশিংটন সফর। এটি এমন এক সময়ে হতে যাচ্ছে, যখন ইসরাইল ও ইরান ১২ দিনের বিমান যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে সফরের সময়সূচি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।

নেতানিয়াহু-ট্রাম্প বৈঠকে গাজা ও ইরান ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন আরেক মার্কিন কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, গাজা যুদ্ধের অবসান ও বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে ট্রাম্প দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়া বৈঠকে সিরিয়ার বিষয়ও আলোচনায় আসবে।


ইসরাইলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার বর্তমানে ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সেখানে গাজায় ২০ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। নেতানিয়াহু সোমবার রাতে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। তবে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

ট্রাম্প সম্প্রতি এক সপ্তাহের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি সম্পাদনের আশা প্রকাশ করেছেন। তবে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা চললেও দুই পক্ষের অবস্থান এখনও দূরত্বেই রয়ে গেছে। হামাস চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতির দাবি জানালেও ইসরাইল সীমিত যুদ্ধবিরতির পক্ষে রয়েছে, যাতে প্রয়োজনে আবারও অভিযান চালানো যায়।

তবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব ও নেতানিয়াহু সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে তারা আগের চেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছেন।

নেতানিয়াহুর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনায় কাতারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিতে ডারমারকে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কাতার মূল চাবিকাঠি। খুব শিগগিরই অগ্রগতি হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে এটি হামাসের উপর নির্ভর করছে।’

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, গাজা সংঘাতের অবসান ট্রাম্পের অগ্রাধিকার। তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইল ও গাজা থেকে আসা ছবি দেখা সত্যিই মর্মান্তিক। প্রেসিডেন্ট এর অবসান চান। তিনি জীবন রক্ষা করতে চান।’

ইসরাইলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে। নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘প্রথমে আমাদের জিম্মিদের মুক্ত করতে হবে। এরপর গাজা সমস্যার সমাধান এবং হামাসকে পরাজিত করতে হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা উভয় লক্ষ্যেই পৌঁছাবো।’

তবে তার জোটের কট্টর অংশীদাররা যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য চাপ দিচ্ছেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ সোমবার বলেছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেয়ে বড় কোনো বিপদ ইসরাইলের জন্য নেই। তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাই, খুনিদের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা নয়। গাজায় শত্রুকে ধ্বংস করতে এবং ইসরাইলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি হুমকি দূর করতে তীব্র ও দ্রুত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

হামাস ৫০ জন জিম্মি আটকে রেখেছে, যাদের মধ্যে ৪৯ জনকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর  অপহরণ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে অন্তত ২৮ জন মৃত, ২০ জন জীবিত এবং দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে ধারণা করছে ইসরাইল। হামাস ২০১৪ সালে গাজায় নিহত এক ইসরাইলি সেনার মরদেহও ধরে রেখেছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং বহু লোক নিখোঁজ হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম