Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যে কারণে এলটিটিইর টার্গেট হন রাজীব গান্ধী

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম

যে কারণে এলটিটিইর টার্গেট হন রাজীব গান্ধী

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

১৯৯১ সালের ২১ মে ভারতের তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল এলাম (এলটিটিই)। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—কেন এলটিটিই’র নিশানায় পরিণত হয়েছিলেন রাজীব গান্ধী?

এর উত্তর খুঁজতে ফিরে যেতে হয় ১৯৮৭ সালে, যখন রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সে বছর তিনি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট জেআর জয়বর্ধনের সঙ্গে স্বাক্ষর করেন একটি ঐতিহাসিক চুক্তি, যা পরিচিত ইন্দো-শ্রীলঙ্কা শান্তিচুক্তি নামে। এই চুক্তির আওতায় এলটিটিই-সহ অন্যান্য তামিল বিদ্রোহী সংগঠনগুলোকে অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারত পাঠায় শান্তিরক্ষী বাহিনী (আইকেএফ)।

এলটিটিই এই চুক্তিকে তাদের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি এবং এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখেছিল। সংগঠনটির নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ শুরু থেকেই চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং ভারতের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু করেন সশস্ত্র লড়াই।

১৯৯০ সালে আইকেএফ শ্রীলঙ্কা থেকে প্রত্যাহার করে নিলেও এলটিটিই’র ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। বরং সংগঠনটি বিশ্বাস করে—এই সামরিক হস্তক্ষেপ ও অস্ত্র জমা দেওয়ার চাপের জন্য সরাসরি দায়ী রাজীব গান্ধী।

এদিকে, ১৯৯১ সালের ভারতের জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেস পার্টির ইশতেহারে ইন্দো-শ্রীলঙ্কা চুক্তির প্রতি সমর্থনের পুনঃউল্লেখ করা হয়, যা এলটিটিই’র সন্দেহ ও প্রতিশোধস্পৃহাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

এরপর এলটিটিই অপারেশন `বিয়ে‘ নামে এক আত্মঘাতী হামলায় হত্যা করা হয় রাজীব গান্ধীকে।

এই হত্যাকাণ্ড শুধু একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রাণহানিই নয়, বরং ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এবং সন্ত্রাসবিরোধী নীতিতে একটি দীর্ঘস্থায়ী ছায়া ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এলটিটিই’র এই পদক্ষেপ তাদের প্রতি ভারতীয় জনসমর্থনের সব পথ বন্ধ করে দেয় এবং পরে ২০০৯ সালে সংগঠনটির পতনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় ভারতীয় রাষ্ট্রের কঠোর অবস্থান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম