মেলানিয়ার ‘শান্তির চিঠি’ পুতিনের কাছে: শিশুদের নিষ্পাপ হাসি ফিরিয়ে আনার আহ্বান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশে এক আবেগঘন চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি তাদের নিষ্পাপ শৈশব রক্ষার আহ্বান জানান। শনিবার আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে এই চিঠি হাতে তুলে দেন তিনি।
রোববার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
চিঠিতে সরাসরি ইউক্রেনের নাম উল্লেখ না করলেও মেলানিয়া লিখেছেন, ‘প্রতিটি শিশু একই স্বপ্ন দেখে—ভালোবাসা, সম্ভাবনা আর বিপদ থেকে নিরাপত্তা। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেই জন্ম হোক বা শহরের প্রাণকেন্দ্রে, তাদের হৃদয়ের নীরব স্বপ্নগুলো এক। অভিভাবক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব এই প্রজন্মের আশা লালন করা। আর নেতা হিসেবে আমাদের কর্তব্য শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রতিটি প্রজন্মের সন্তান জন্ম নেয় এক ধরনের পবিত্র নিষ্পাপ নিয়ে—যা ভৌগোলিক সীমা, সরকার বা মতাদর্শের ঊর্ধ্বে। অথচ আজকের পৃথিবীতে বহু শিশু এমন অন্ধকারের মধ্যে বাস করছে, যেখানে তাদের হাসি নিভে যেতে বসেছে। পুতিন সাহেব, আপনি এককভাবে তাদের সেই সুরেলা হাসি ফিরিয়ে দিতে পারেন।’
মেলানিয়া তার চিঠিতে জোর দিয়ে বলেন, শিশুদের নিষ্পাপত্ব রক্ষা করা মানে কেবল রাশিয়াকেই সেবা করা নয়, বরং মানবতাকেই সেবা করা। তিনি লিখেছেন, ‘শিশুদের নিষ্পাপত্ব রক্ষা করলে আপনি কেবল রাশিয়াকেই সেবা করবেন না, মানবতাকেও সেবা করবেন। এটি এমন এক সাহসী ধারণা যা মানব বিভাজনকে অতিক্রম করে। আর এই দায়িত্ব আপনি আজই কলমের একটি আঁচড়ে বাস্তবায়ন করতে পারেন।’
এই চিঠি প্রকাশ পেল এমন সময়ে যখন ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, রাশিয়া চলমান আগ্রাসনে শিশুদের অপহরণ করছে, ১৮ বছরে পৌঁছানোর পর তাদের জোর করে সেনাবাহিনীতে পাঠাচ্ছে এবং নিজ দেশবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বাধ্য করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রধান সহযোগী আন্দ্রি ইয়েরমাক এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্র অনুমোদিত পরিকল্পনা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব ও কিয়েভ যৌথভাবে নিখোঁজ শিশুদের খুঁজে বের করার উদ্যোগে রাশিয়ান-পরিচালিত বহু ‘ক্যাম্প’-এর তথ্য নথিভুক্ত করেছে। সেখানে শিশুদের ইউক্রেনীয় ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করে রুশ সংস্কৃতিতে ডুবিয়ে রাখা হয় এবং তাদের ‘আদর্শ নাগরিক’ বানানোর চেষ্টা চালানো হয়।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) শিশু অপহরণের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে মস্কো তখনই অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।


