সাক্ষাৎকার
গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে ইসলামী ব্যাংক: মো. ওমর ফারুক খান
ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওমর ফারুক খান।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মো. ওমর ফারুক খান দায়িত্ব পালন করছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হিসাবে। ১৯৮৬ সালে শরিআ’হভিত্তিক এ ব্যাংকটিতে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। কৃষি খাতে বিনিয়োগ (ঋণ) বিতরণে সামগ্রিক সমস্যা, সম্ভাবনা ও প্রস্তাবনা এবং এ খাতে ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়ন প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন যুগান্তরের সঙ্গে।
যুগান্তর : বাংলাদেশে কৃষি খাতে বিনিয়োগ (ঋণ) বিতরণের ক্ষেত্রে কেমন সম্ভাবনা দেখছেন?
মো. ওমর ফারুক খান : দেশের প্রায় ৪০ ভাগ শ্রমশক্তি কৃষি খাতে নিয়োজিত এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এই খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই এই খাতে বিনিয়োগ (ঋণ) বিতরণ ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। প্র্রতিবছরের ন্যায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও বাংলাদেশ ব্যাংক ৩৮ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যা গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৮.৫৭ শতাংশ বেশি।
যুগান্তর : আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের জন্য কী কী স্কিম রয়েছে?
মো. ওমর ফারুক খান : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৯৫ সাল থেকে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) নামে কৃষি ও অকৃষি খাতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রদান করে আসছে। বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৪৫ হাজার ব্যক্তিকে ৮১০ কোটি টাকা কৃষি বিনিয়োগ প্রদান করেছে।
যুগান্তর : কৃষি খাতে বিতরণ করা ঋণ দ্রুত আদায় হয়-এর কারণ কী?
মো. ওমর ফারুক খান : কৃষক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া বিনিয়োগ (ঋণ) অপরিশোধের কারণে আইনি জটিলতায় জড়াতে চান না, যা তাদের সময়মতো বিনিয়োগ (ঋণ) পরিশোধে উৎসাহিত করে। বিনিয়োগ প্রদানের পর ব্যাংক নিয়মিত তদারকি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে।
যুগান্তর : কৃষি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কী ধরনের নীতি সহায়তা দরকার?
মো. ওমর ফারুক খান : বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে। কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে।
যুগান্তর : এ খাতে বিনিয়োগ বিতরণের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো কী কী? এগুলো কিভাবে সমাধান করা যায়?
মো. ওমর ফারুক খান : দেশে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে যাদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ (ঋণ) পেয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ, যা সংখ্যায় ৬৫ লাখ মাত্র। যাদের মধ্যে ৫০ লাখ বিনিয়োগ (ঋণ) নিয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও থেকে। এ সমস্যার পেছনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনীহা, জটিল ঋণ প্রক্রিয়া, অলিখিত লেনদেন খরচ এবং প্রচারের অভাব মূলত দায়ী। দেশের ৬১টি ব্যাংকের প্রায় ১০ হাজার শাখার অর্ধেকের বেশি গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত হলেও, এসব শাখা কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। ফলে ৭৫ শতাংশ কৃষক ২০ থেকে ৩০ শতাংশ চড়া সুদে এনজিও থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব সমস্যা সমাধানে বহুমুখী ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
যুগান্তর : আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষি বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি?
মো. ওমর ফারুক খান : আমরা কৃষির তিনটি প্রধান খাত যেমন ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে কৃষি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। উচ্চফলনশীল জাত, উচ্চ মূল্যে ফসল ও আমদানি নির্ভর ফসল চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি।
