Logo
Logo
×

শেষ পাতা

যুগান্তরকে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

সংকট সমাধানে জামায়াত সেনাবাহিনীর সঙ্গেও আলোচনা করেছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সংকট সমাধানে জামায়াত সেনাবাহিনীর সঙ্গেও আলোচনা করেছে

ছবি: সংগৃহীত

সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ বা আলোচনা করেছে জামায়াত। রোববার যুগান্তরকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, চলমান সংকট যতটা বাস্তব ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল সন্দেহ ও একের ওপর অন্যের আস্থার অভাব। এ ঘটনায় চারটি পক্ষ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকার, সেনাবাহিনী, বিএনপি ও এনসিপি। সংকট সমাধানে মধ্যস্থতা করেছে জামায়াত।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, আর কোনো সমস্যা হবে না। সবাই গ্রহণ করতে পারে এমন একটা অবস্থা তৈরি হবে ইনশাআল্লাহ এবং আমরা সবাই নির্বাচনমুখী হব।

জামায়াত মনে করছে, এই সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করলে দেশ গভীর সংকটে পড়ে যাবে। অনিশ্চিত হয়ে পড়বে নির্বাচন। জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম, কিন্তু নার্ভাস হইনি। মনে করেছি, এটার সুন্দর সমাধান হবে। যার জন্য আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তাৎক্ষণিকভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিএনপি, এনসিপি এবং ইসলামিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার এবং সেনাপ্রধানের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ রক্ষা করেছি। পরস্পরের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল, সেগুলো যেন দূর হয়ে যায় আমরা সে বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিলাম।

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতা বলেন, এই সংকটের মূলে দুটি বিষয় বেশি ছিল-এক. নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা। এই বিষয়টা নিয়ে একটা জেদাজেদি ছিল। একপক্ষ মনে করেছে ডিসেম্বরে দিতেই হবে। আবার কেউ মনে করেছে, আমাকে কেউ নির্দেশ দিলেই তো আমি সে নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করব না। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

তিনি বলেন, তবে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলার চেষ্টা করেছি, নির্বাচন দেওয়াই আপনার অন্যতম দায়িত্ব। নির্বাচনের জন্য সংস্কারও প্রয়োজন আমরা এটা সব সময় বলে আসছি। আপনি এ বিষয়ে উদ্যোগও নিয়েছেন। কিন্তু কখন কতটুকু সংস্কার হবে, কখন নির্বাচনের জন্য একটি উত্তম সময়-এ নিয়ে ঐকমত্য দরকার। আর এ বিষয়ে আপনার দিক থেকে এগুলো তো স্পষ্ট করা দরকার। কেননা, স্পষ্ট না করার ফলে কেউ কেউ হয়তো মনে করছে, নির্বাচন হয়তো সঠিক সময় হবে না। আবার কেউ কেউ উসকানিমূলক কথাও বলে যে, ৫ বছর থাকতে হবে, ২ বছর থাকতে হবে। যার ফলে সব মিলিয়ে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে। সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে নির্বাচনের একটা সুস্পষ্ট রোডম্যাপ হওয়া দরকার। এটা যদি এক মাস বেশি বা কম হয়, এ ব্যাপারে মানুষ খুব একটা অসহিষ্ণু হবে না। একইভাবে সংস্কার প্রশ্নেও আপনার একটা সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়া দরকার।

নায়েবে আমির আরও বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ রক্ষা করেছি। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মধ্যেও এক ধরনের চিন্তা ছিল। সেটা হলো-নির্বাচন কখন হবে বা আদৌ নির্বাচন হবে কিনা। এছাড়া এ সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে তাদেরও একটা সংশয় তৈরি হয়েছিল। তাদের আমরা বলেছি, নির্বাচনের ব্যাপারে স্পষ্ট হওয়া উচিত, আর আপনাদেরও ধৈর্য ধরে সহযোগিতা করা উচিত।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রত্যেকেই মনে করে একটা যথাযথ নির্বাচন হওয়া উচিত। আর সেনাবাহিনীর সদস্যরাও তো এ দেশেরই মানুষ। নির্বাচনে তারাও একটা পার্টনার। কারণ সেনাবাহিনী ছাড়াও তো নির্বাচন হবে না। সুতরাং তাদের এ বিষয়ে একটা ভাবনা আছে। তবে চাপ দিয়ে এই তারিখেই হতে হবে, এটা আবার একটু হার্ড মনে হয়। রাজনীতিতে হার্ড বা আনকম্প্রোমাইজিং হয়ে যাওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। এটা জামায়াত সব সময়েই মনে করে।

সেনাবাহিনী জামায়াতে ইসলামী সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম