Logo
Logo
×

যুগান্তরের বিশেষ আয়োজন

সাক্ষাৎকার

উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট ইস্টার্ন ব্যাংক

আলী রেজা ইফতেখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট ইস্টার্ন ব্যাংক

আলী রেজা ইফতেখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি

সুপারসেভার, পাওয়ার ব্যাংকিং ও প্রাইওরিটি ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রোফাইল অনুযায়ী, সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে ইস্টার্ন ব্যাংকে। নিষ্ক্রিয় বা নিম্ন ব্যালেন্সযুক্ত অ্যাকাউন্টগুলোকে আবারও সক্রিয় করতে নিয়মিত ইমেইল, এসএমএস ও গ্রাহক ভিজিটের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্যাংক। সর্বোপরি, কার্ড, বিভিন্ন অফার-সুবিধা ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে তারা সচেষ্ট। আমানত সংগ্রহসহ নানা বিষয়ে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার।

যুগান্তর : ইবিএল আমানতের ক্ষেত্রে কী ধরনের আকর্ষণীয় সুবিধা প্রদান করে?

আলী রেজা ইফতেখার : আমরা আমানত বাড়ানোর জন্য কয়েকটি কৌশলগত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। প্রথমত, লক্ষ্যভিত্তিক পণ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে কাজ করছি-যেমন ফ্রিল্যান্সার, মেরিনার, নারী, স্টুডেন্ট ব্যাংকিং এবং ইসলামিক হিসাব চালু করা হয়েছে, যাতে তাদের জীবনধারার সঙ্গে মিল রেখে সঞ্চয় সহজ হয়। দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধার প্রসারে স্কাইব্যাংকিং এবং সেল্ফসার্ভিস প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে, যেখানে গ্রাহকরা ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খোলা, ডিপিএস বা ফিক্সড ডিপোজিট শুরুসহ নানাবিধ লেনদেন করতে পারছেন। এছাড়া সুপারসেভার, পাওয়ার ব্যাংকিং ও প্রাইওরিটি ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রোফাইল অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। নিষ্ক্রিয় বা নিম্ন ব্যালেন্সযুক্ত অ্যাকাউন্টগুলোকে আবারও সক্রিয় করতে আমরা নিয়মিত ইমেইল, এসএমএস ও গ্রাহক ভিজিটের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি। সর্বোপরি, কার্ড, বিভিন্ন অফার-সুবিধা ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো-একটি আধুনিক, নিরাপদ ও সম্পূর্ণ গ্রাহককেন্দ্রিক সঞ্চয় অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা।

যুগান্তর : দুর্বল ব্যাংকগুলো যদি ১২ শতাংশ সুদে আমানত গ্রহণ করে, তাহলে বাজারে কী ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে?

আলী রেজা ইফতেখার : যদি কোনো দুর্বল ব্যাংক ১২ শতাংশের মতো অস্বাভাবিক উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করে, তবে তা বাজারে গুরুতর অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। প্রথমত, এতে বাজারে বিকৃতি ঘটে, কারণ সুস্থ ও টেকসই ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক হারে আমানত সংগ্রহে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। ফলে গ্রাহকের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হয়-তারা মনে করতে পারেন, অন্য ব্যাংকগুলো কেন কম সুদ দিচ্ছে; যার ফলে সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের প্রতি আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে। এছাড়া উচ্চ সুদের প্রলোভনে আমানত সংগ্রহ করলেও তা যদি লাভজনকভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব না হয়, তবে সেই ব্যাংকের জন্য নগদ অর্থ প্রবাহ (লিকুইডিটি) সংকটের আশঙ্কা থাকে। একপর্যায়ে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাজারে ভারসাম্য নিয়ে আসতে হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে, যা আবার নীতিগত স্বতন্ত্রতার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সর্বোপরি, এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ সুদহার দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও আস্থার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

যুগান্তর : আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তায় আপনারা কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন?

আলী রেজা ইফতেখার : আমরা আমানতকারীদের অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানামুখী প্রযুক্তিগত ও নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আধুনিক সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেম ও এনক্রিপশন প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ডিজিটাল লেনদেনকে সুরক্ষিত রাখি। আমাদের স্কাইব্যাংকিং অ্যাপ এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন, বায়োমেট্রিক লগইন এবং রিয়েল-টাইম ফ্রড মনিটরিং চালু রয়েছে, যা গ্রাহকের তথ্য ও অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

আমরা গ্রাহকদের নিয়মিতভাবে সাইবার সচেতনতাবিষয়ক বার্তা পাঠাই, যাতে তারা নিজেও সাবধানতা অবলম্বন করতে পারেন। এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ, নিরীক্ষা ও ঝুঁকিব্যবস্থাপনার কাঠামো মেনে চলি, যাতে গ্রাহকের আমানত নিরাপদ থাকে। আমাদের লক্ষ্য হলো-একটি নির্ভরযোগ্য, স্বচ্ছ এবং ঝুঁকিমুক্ত ব্যাংকিং পরিবেশ নিশ্চিত করা, যেখানে গ্রাহক নিশ্চিন্তে তার অর্থ রাখার আস্থা পান।

যুগান্তর : বাজারের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কেন গ্রাহকরা আপনার ব্যাংকে আমানত রাখতে আগ্রহী হবেন?

আলী রেজা ইফতেখার : গ্রাহকরা ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসিকে বেছে নেন, কারণ এখানে রয়েছে দৃঢ় বিশ্বাস, আর্থিক মজবুত অবস্থান এবং আধুনিক সেবা-যা আমাদের অন্যান্য ব্যাংক থেকে আলাদা করে। ১৯৯২ সাল থেকে প্রায় তিন দশক ধরে টেকসই ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসা এ ব্যাংক গত তিন বছর ধরে সর্বোচ্চ ‘এএএ ক্রেডিট রেটিং’ ও ‘এসটি-ওয়ান’ শর্ট-টার্ম রেটিং ধারাবাহিকভাবে অর্জন করেছে, যা আমাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও দায়িত্বশীল পরিচালনার প্রমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সাসটেইনেবিলিটি রেটিং রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ প্রাপ্তির মাধ্যমে আমরা পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ব্যাংকিংয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছি।

আমাদের আধুনিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেমন স্কাইব্যাংকিং, সেল্ফসার্ভিস এবং বায়োমেট্রিক সিকিউর কার্ড, গ্রাহকদের সময় ও নিরাপত্তা দানে সহায়ক। সুপারসেভার, পাওয়ার ও প্রাইওরিটি ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে গ্রাহককেন্দ্রিক সুবিধা প্রদান এবং ইসলামিক ব্যাংকিং, নারী ও তরুণ প্রজন্মের জন্য বিশেষ গুরুত্ব আমাদের বৈচিত্র্য তৈরি করেছে। তাই, টেকসই ও আস্থাভিত্তিক ব্যাংকিং প্রতিশ্রুতির কারণে গ্রাহকরা ইবিএলকে তাদের সঞ্চয়ের বিশ্বস্ত ঠিকানা হিসাবে বেছে নিতে পারেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম