Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

সৌন্দর্যের ছোঁয়ায় গ্রীষ্মের ফুল

Icon

শেখ আব্দুর রহিম

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সৌন্দর্যের ছোঁয়ায় গ্রীষ্মের ফুল

শীতের অবসাদ আর বসন্তের গুনগুনানি সব শেষে রৌদ্রময় দিনগুলো নিয়ে প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের আগমন। খরতাপ ও রোদের প্রখরতা থাকলেও, গ্রীষ্মের প্রকৃতি নিরস নয়। এ সময়টাতেই প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলে নানা রঙের ও ঘ্রাণের ফুল। চারদিকের রৌদ্রস্নাত দগ্ধ বাতাস আর উত্তাল হাওয়ায় একেক করে ফোটে একেক রকম ফুল। সৌন্দর্যের দ্যুতি ছড়ানো মনোমুগ্ধকর এসব ফুল নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন।

সোনালু : বাংলাদেশের একটি দৃষ্টিনন্দন ও জনপ্রিয় ফুল সোনালু। গ্রীষ্মের প্রথম দিক থেকেই এ গাছের ফুল ঝুলন্ত থোকায় ধরে এবং উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয়। এ ফুল বসন্তের শেষে ও গ্রীষ্মের শুরুতে ফোটে। ফুলের গন্ধ মিষ্টি ও মনমুগ্ধকর। এটি সাধারণত রাস্তাঘাট ও উদ্যানে শোভা বর্ধনের জন্য লাগানো হয়। সোনালু গাছের ছায়াঘন এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতেও এর নানা অংশ ব্যবহার হয়।

কৃষ্ণচূড়া : কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মকালের এক অবিচ্ছেদ্য প্রতীক। বড় আকারের এ গাছটি এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত রক্তিম ফুলে ভরে যায়। এর ফুলগুলো সাধারণত আগুন লাল বা কমলা রঙের হয় এবং পত্রহীন ডালপালায় ঝাঁকে ঝাঁকে ফোটে। গাছটি রাস্তার পাশে, স্কুল-কলেজের আঙিনায় এবং পার্কে প্রচুর দেখা যায়। এর আগুনরঙা পাপড়ি নিয়ে গ্রীষ্মকালে থোকায় থোকায় দেশের রাস্তাঘাট, বনসহ বাড়ি কিংবা অফিসের আঙিনা রাঙিয়ে তোলে। ছায়া দেওয়ার জন্যও গাছটি বেশ প্রসিদ্ধ।

রক্তজবা : রক্তজবা একটি চিরসবুজ গাছের ফুল, যা প্রায় সারা বছরই ফোটে, তবে গ্রীষ্মে এর রং আরও উজ্জ্বল হয়। এটি পাঁচটি পাপড়িযুক্ত হয় এবং মাঝখানে লম্বা একটি স্তম্ভ থাকে। রক্তজবা সাধারণত লাল রঙের হলেও হলুদ, সাদা, গোলাপি ইত্যাদি রঙেও দেখা যায়। রক্তজবা ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি ফুল। এটি মন্দিরে পূজার জন্য ব্যবহৃত হয়।

সূর্যমুখী : সূর্যমুখী একটি অত্যাশ্চর্য গ্রীষ্মকালীন ফুল, যা সূর্যের দিকে মুখ ঘুরিয়ে ফোটে। এর বৃহৎ আকার ও উজ্জ্বল হলুদ পাপড়ি দেখতে চোখজুড়ানো। সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল তৈরি হয়, যা স্বাস্থ্যসম্মত এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মের প্রতীকরূপে ফুলটির ব্যবহার বেশ উল্লেখযোগ্য।

বেলি : বেলি ফুল তার মনোমুগ্ধকর ঘ্রাণের জন্য প্রসিদ্ধ। ছোট সাদা এ ফুল গ্রীষ্মে সন্ধ্যা ও রাতে বেশি ফোটে এবং চারপাশে এক স্বর্গীয় সুবাস ছড়িয়ে দেয়। বেলি ফুলের ব্যবহার রয়েছে চা, আতর ও গয়নাতে। সুবাসে পরিপূর্ণ এ ফুল গুচ্ছাকারে ফোটে, রাতের দিকে ঘ্রাণ বেশি ছড়ায়।

রজনীগন্ধা : রজনীগন্ধা একাধিক সাদা ফুলের সারি নিয়ে ফোটে। লম্বা কাণ্ডের এ গুচ্ছ ফুলের সুগন্ধ দীর্ঘস্থায়ী এবং আরামদায়ক। এ ফুল গ্রীষ্মে বিশেষত বিয়ের সাজে ও আতর তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফুলদানিতে ব্যবহারের জন্য ও উপহার হিসাবে দেওয়ার জন্য রজনীগন্ধার জুড়ি মেলা ভার।

কণকচাঁপা : এ হলুদ ফুলটি গ্রীষ্মে ঘন সবুজ পাতার মাঝে ফুটে ওঠে প্রকৃতিকে করে তোলে আরও প্রাণবন্ত। এটি সাধারণত বারান্দা বা দেওয়ালের পাশে লতা হিসাবে চাষ করা হয়। উজ্জ্বল হলুদ রঙের এ ফুলটি সৌন্দর্য বাড়াতে উপযোগী। সহজে বাড়ির বারান্দায় চাষ করা যায়

জারুল ফুল : জারুল ফুল গ্রীষ্মের রঙিন দূত, যেন নীলিমার পরশে স্নাত।

বর্ণে বেগুনি, কখনো হালকা নীল, নজরকাড়া তার জ্যোতি বিলায়। বসন্ত শেষে গ্রীষ্মের শুরুতে ডালে ডালে রং ছড়িয়ে দেয়। এ ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন যেন প্রকৃতির মধুর গান।

জারুল গাছ ছায়াদানকারী, রাস্তার ধারে সৌন্দর্য বাড়ায়।

এর সৌন্দর্য আর কোমল গন্ধ মনকে করে প্রশান্তিময়।

গ্রীষ্মকালের উত্তপ্ত দাবদাহের মাঝে এ ফুলগুলো যেন প্রকৃতির হাসি হয়ে ফুটে ওঠে। শুধু চোখের আরামই নয়, এসব ফুলের রয়েছে নানা উপকারিতা ও ব্যবহার। তাই গ্রীষ্মকালে চারপাশের রঙিন ও সুগন্ধি ফুলগুলোকে উপভোগ করাই হোক প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতার অনুশীলন।

গ্রীষ্মকাল জারুল ফুল বাতাস কৃষ্ণচূড়া

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম