মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিং দরকার, কীভাবে বুঝবেন
ডা. চৌধুরী সাইফুল আলম বেগ
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আমরা সর্দি-জ্বরে ডাক্তার দেখাই, জটিল রোগ হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হই, চোখে সমস্যা হলে চশমা পরি। কিন্তু মনের ভারসাম্য হারালে আমরা চুপ থাকি। কেন?
* কারণ
সমাজ আমাদের শিখিয়েছে, কাউন্সেলিং মানেই ‘গোপন কিছু’ কিংবা ‘পাগল’ হওয়া। সত্য হচ্ছে, কাউন্সেলিং মানেই আপনি সাহসী, সচেতন, দায়িত্বশীল। তাহলে কখন বুঝবেন, সময় এসেছে একজন কাউন্সেলরের কাছে যাওয়ার-
▶ আবেগে নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন? হঠাৎ রাগে ফেটে পড়েন, কিংবা কান্না আসছে হুটহাট? নিজেকে অপরিচিত লাগে?
▶▶ আপনার ভেতরের আবেগগুলো হয়তো বিস্ফোরণের অপেক্ষায়। এখনই সাহায্য নেওয়ার সময়।
▶ ঘুম, খাওয়া, জীবন সব এলোমেলো? রাতে ঘুম আসে না, দিনে ঘুমঘুম ভাব? খেতে ইচ্ছা হয় না, কিংবা হুট করে অনেক বেশি খাচ্ছেন?
▶▶ এগুলো আপনার মনের ভারসাম্য হারানোর স্পষ্ট সিগন্যাল।
▶ সব কিছু ভালো, তবুও মন ভালো নেই? বাইরে হাসছেন, কিন্তু ভেতরে খালি একটা হাহাকার?
▶▶ এটাকেই বলে Smiling Depression-দেখতে সুস্থ, আসলে ভেতরে একা।
▶ নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ চলছে? ‘আমি ব্যর্থ’, ‘আমি কারো প্রিয় না’-এ ধরনের ভাবনায় ঘিরে আছেন?
▶▶ আপনি হয়ত Negative Self-Talk-এ আক্রান্ত। কাউন্সেলিংয়ে এটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
▶ অতীত কিছুতেই আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছে না? পুরোনো অপমান, ট্রমা, সম্পৃক্তা সব যেন পিছু টানে?
▶▶ কাউন্সেলিং এসব পেছনের দাগ মুছে সামনে চলতে শেখায়।
▶ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন? কাজ, পড়া, সম্পর্ক-কিছুই আর টানে না?
▶▶ এটা হতে পারে Burnout বা Anxiety Paralysis।
* সত্যিটা জানুন
কাউন্সেলিং নেওয়া মানে আপনি দুর্বল নন বরং আপনি সাহসী। আপনি নিজের জটিল অনুভূতিগুলোর মুখোমুখি হতে তৈরি। যদি ওপরের যে কোনো একটি উপসর্গও আপনার মধ্যে থাকে, যদি মনে হয় ‘কারও সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারছি না’, তাহলে দয়া করে চুপ থাকবেন না। একজন কাউন্সেলরের সঙ্গে কথা বলুন। এখনই। মনে রাখবেন, ‘মনের যত্ন নেওয়াও নিজের প্রতি দায়িত্ব’।
লেখক : সিনিয়র জিপি, ট্রেইন্ড ইন মেন্টাল হেলথ, ওয়েরিংটন মেডিক্লিনিক, অস্ট্রেলিয়া।
