Logo
Logo
×

মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় রিমোট কন্ট্রোলে গণহত্যা

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গাজায় রিমোট কন্ট্রোলে গণহত্যা

সংগৃহীত ছবি।

গাজা সিটিতে রাতের অন্ধকারে হঠাৎ এক বিশাল বিস্ফোরণ। বিছানা থেকে ছিটকে পড়েন হামজা শাবান। হতভম্ব ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। জানালার বাইরে তাকাতেই দেখতে পেলেন রিমোট কন্ট্রোলের বিস্ফোরক বোঝাই রোবট। ৩৫ বছর বয়সি হামজা বলেন, ‘রোবটটা কোথায় আছে তা দেখতে আমি আবারও জানালার বাইরে তাকালাম, দেখলাম এটি আমার থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে। এরপর আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটল যা আমাকে দুই মিটার দূরে ছুড়ে দিল। আমি হাত ও হাঁটুতে ভর করে শোবারঘরের দিকে পালাতে শুরু করলাম।’ হামজা আরও বলেন, ‘আমি বিস্ফোরণের ভয়ানক শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম।’ এটি কোনো বিমান হামলা নয়, এটি এক চলন্ত মারণ যন্ত্র। যার ধ্বংসযজ্ঞ শহরের প্রতিটি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এমন ঘটনা গাজার বাসিন্দাদের জন্য এখন খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। গত মাসে ঘোষণা করার পর প্রায় ১০ লাখ মানুষের বাসস্থান গাজা সিটিতে হামলা সম্প্রসারণ করেছে ইসরাইলি সেনারা। এরপর থেকে প্রায় প্রতি রাতেই বড় বড় বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে শহরটি। গাজার ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় স্থলসেনা মোতায়েনের পরিবর্তে আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) পাঠাচ্ছে ইসরাইল। এই নতুন সহিংসতার কেন্দ্রে আছে ইসরাইলের সর্বশেষ যুদ্ধকৌশল-দূরনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরকভর্তি এই ‘রোবটযান’। টনের পর টন বিস্ফোরকভর্তি এপিসিগুলো দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করে নির্দিষ্ট স্থানে পাঠানো হয়। তারপর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে। হামজা বলেছেন, ‘সাধারণত রাত ১০ বা ১১টার দিকে যখন মানুষ ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখনই বিস্ফোরণ শুরু হয়।’ প্রতি রাতেই এমন ৮ থেকে ১০টা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে উল্লেখ করেন হামজা। তিনি আরও বলেছেন, ‘এসব বিস্ফোরণ ভীষণ শক্তিশালী। পুরো ভবনকে গুঁড়িয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এগুলো বিমান হামলার চেয়েও অনেক বেশি বিধ্বংসী।’ গাজাভিত্তিক সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ১৩ আগস্ট থেকে উপত্যকার জনবহুল এলাকায় অন্তত ১০০টি ‘বিস্ফোরক রোবট’ ব্যবহার করা হয়েছে। অলাভজনক সংস্থা ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের তথ্যানুযায়ী-এসব বিস্ফোরণে প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি আবাসিক ইউনিট ধ্বংস হচ্ছে। সংস্থাটির আরও জানিয়েছে, প্রতিটি রোবটে প্রচণ্ড শক্তিশালী বিস্ফোরক ভরা থাকে। এর ওজন কখনো কখনো সাত টন পর্যন্ত হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে শেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে ইসরাইল। হামাস যোদ্ধারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি এবং আত্মসমর্পণের দাবি মেনে না নিলে গাজায় হারিকেনের মতো হামলার ঝড় তুলবে বলে সতর্ক করেছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ। সোমবার এ হুমকি দেন তিনি। অন্যদিকে, একই দিনে স্পেন ঘোষণা করেছে, গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে এবং এর দায়ীদের শাস্তি দিতে তারা ৯টি পদক্ষেপ নেবে। এর মধ্যে আছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইসরাইলকে সরবরাহিত যে কোনো অস্ত্রবাহী বিমানকে স্পেনের আকাশপথ ব্যবহার থেকে বন্ধ করা এবং ইসরাইলি সেনাদের জ্বালানি বহনকারী জাহাজকে স্পেনের বন্দর ব্যবহার থেকে নিষিদ্ধ করা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম