ইরান আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করেনি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
আব্বাস আরাঘচি। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করেনি তেহরান।
শনিবার তেহরানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক বৈঠকে বিদেশি রাষ্ট্রদূত, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের প্রধানদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
আরাঘচি বলেন, ‘ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের যারা নিন্দা করেছে আমরা সেই সব দেশকে কৃতজ্ঞতা জানাই। প্রায় ১২০টি দেশ ইরান বিরোধী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদি রাষ্ট্রের আগ্রাসনের নিন্দা করেছে।’
আরাঘচি আরও বলেন, ‘আইএইএ’র সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি।’ তিনি যোগ করেন, ‘ইরান এনপিটি-র (পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) একটি দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে বরাবরই এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা করে এসেছে।’
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি বরং এটি এখন নতুন এক রূপে চলছে। এখন থেকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সম্পর্ক ইরানের জাতীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কাউন্সিল (এসএনএসসি) দ্বারা পরিচালিত হবে।’
এর আগে গত ২ জুলাই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা আর পরিদর্শন করতে পারবে না আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)- এমন একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির ঠিক আগের দিন (২৫ জুন) আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করতে বিলটি পাস করে ইরানের পার্লামেন্ট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার যেকোনো অনুরোধ এখন থেকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আক্রমণের শিকার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছে পরিদর্শকরা গেলে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ থাকা স্বাভাবিক। আমাদের স্থাপনাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে এবং এখন এসব স্থাপনার আশেপাশে যেকোনো সময় তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া বা বিস্ফোরণের মতো ঝুঁকি রয়েছে। তাই আমাদের মতে, এধরনের পরিস্থিতিতে পরিদর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়।’
এ সময় তিনি কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘ফের কূটনীতিতে ফেরার বাইরে আর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘একটি সমঝোতামূলক ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধ এই সত্যটিই আরও জোরালোভাবে প্রমাণ করেছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তার আগে অন্য পক্ষকে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে তারা সত্যিকারের কূটনীতি চায়, শুধুমাত্র নিজেদের লক্ষ্য হাসিলের জন্য কূটনীতিকে মুখোশ হিসেবে ব্যবহার করতে নয়।’
এ মন্তব্যের মাধ্যমে আরাঘচি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করেন যে, গত ১৩ জুন যখন ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে, তখন ১৫ জুন ছয় দফা আলোচনার পরবর্তী রাউন্ড রোমে অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
