হিজবুল্লাহর স্পষ্ট ঘোষণা: ‘ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ নয়, অস্ত্র সমর্পণ নয়’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান নিরস্ত্রীকরণ প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ইসরাইলি হামলায় শীর্ষ হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে দেওয়া ভাষণে কাসেম বলেন, ‘যারা আমাদের অস্ত্র জমা দিতে বলে, তারা আসলে তা ইসরাইলের হাতে তুলে দিতে চায়। আমরা কখনোই ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ করব না।’
এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি হামলা থামাতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলমান, এবং ওয়াশিংটন বৈরুতের উপর চাপ দিচ্ছে যেন মন্ত্রিসভার মাধ্যমে হিজবুল্লাহর সম্পূর্ণ নিষস্ত্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২৩ সালের নভেম্বরের একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি অনুসারে হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যাওয়ার কথা ছিল, যাতে দক্ষিণ লেবাননে লেবানিজ সেনা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা টহল দিতে পারে। তবে বাস্তবায়নে বাধা তৈরি হয়েছে ‘সার্বভৌমত্ব’ ও ‘অনুমতি’ নিয়ে মতানৈক্যের কারণে।
এ অবস্থায় হিজবুল্লাহ কিছুটা অস্ত্র কমানোর চিন্তা করছে বলে গুঞ্জন থাকলেও কাসেম এসব জোরালোভাবে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের ড্রোন-মিসাইল সরাতে বলছে, তারা আসলে ইসরাইলের ভীতিকে প্রশমিত করতে চায়। কিন্তু ইসরাইল আমাদের হারাতে পারবে না, লেবাননকে বন্দি করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘লিটানির দক্ষিণে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হলেও, আমাদের অস্ত্রনীতি সেই সীমিত চুক্তির বাইরে। আমাদের অস্ত্র লেবাননের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এর সঙ্গে ইসরাইলের কোনও সম্পর্ক নেই।’
এএফপির উদ্ধৃতি অনুযায়ী, লেবাননের সরকার এখন ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চাপ’ অনুভব করছে, যাতে তারা হিজবুল্লাহর অস্ত্র জমাদান ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেছেন, যেখানে ‘রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব কেবল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা’র বিষয়টি আলোচনায় আসবে বলে জানা গেছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের দূত টম ব্যারাকের নিষস্ত্রীকরণ প্রস্তাব এবং এর প্রভাব।
লেবাননে এ নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজনও তীব্র হয়ে উঠেছে—হিজবুল্লাহর মিত্ররা প্রতিরোধের পক্ষে, অপরপক্ষ চাইছে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বাইরে আর কোনো সশস্ত্র শক্তি না থাকুক।
তবে হিজবুল্লাহর অবস্থান এখনও অটল। কাসেম স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন: ‘ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হলে, আমাদের অস্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও আলোচনাই হবে না।’

