দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা টেস্ট চালু রাখার দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) মিলনায়তনে এমটিএফ আয়োজিত ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখার দাবি জানিয়েছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম (এমটিএফ)।
চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে তিন শিফটে টেস্ট সুবিধা চালু হলে সরকারি সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনাসহ রোগীদের দ্রুত রোগনির্ণয় ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
শুক্রবার রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) মিলনায়তনে এমটিএফ আয়োজিত ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এমটিএফের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সোহেল রানার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. এসএম খালিদুজ্জামান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সমাজকর্মী মিজানুর রহমান খান, জুলাই যোদ্ধা রেজাউল করিম শাকিল, ডা. শফিকুল ইসলাম জুয়েল, বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মিয়া মু. গোলাম মাওলা, এমটিএফ মহাসচিব রিপন সিকদার প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমটিএফ দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন মু. সোহেল হাওলাদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামে সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নির্ভূল রোগ নির্ণয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট ও টেকিনিশয়ানরা। সরকারিভাবে পদ সৃষ্টি করে নিয়মিত নিয়োগ দিতে পারলে মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থী বাড়বে। এজন্য অন্যান্য ডিপ্লোমাধারীদের মতো ১১তম থেকে ১০তম গ্রেডে দ্রুত উন্নিতকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
প্রধান বক্তা ডা. এসএম খালিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা ধরে মেডিকেল জনবলের টিমওয়ার্ক নিশ্চিত হলে সেবা গ্রহীতারা সহজে সেবা পাবে।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সরকারি হাসপাতালে তিন শিফটে (মর্নিং, ইভিনিং ও নাইট) সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের বহির্বিভাগ এক শিফট চালু থাকায় সেবা গ্রহীতার কর্মঘণ্টা নষ্ট করে সেবা নিতে আসেন। বাকি দুই শিফটে ভবন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সামগ্রী অব্যবহৃত থাকে। এক শিফটে সেবা গ্রহীতাদের উপস্থিতি কম হলে অনেক রি-এজেন্ট মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকি থাকে। এমনকি ইভিনিং ও নাইট শিফটে পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু না থাকায় অধিকাংশ রোগীকে বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হয়। প্রান্তিক পর্যায়সহ সব স্তরে তিন শিফট স্বাস্থ্যসেবা চালু হলে একই ভবন ও মেশিনের সর্বোচ্চ ব্যাবহার হবে। রোগীরা সুবিধামত সময়ে সেবা নিতে পারবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় সম্ভব হওয়ায় খরচ ও ঝুঁকি কমবে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে স্বল্প সেবাদানকারী জনবলের কারণে পরীক্ষাসমূহের কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা সম্ভব হয় না। এতে ল্যাবগুলোতে রিপোর্ট ফলাফলে ভিন্নতা দেখা দিচ্ছে। খরচ কমিয়ে সেবা বাড়িয়ে রাজস্ব আয়ের মাধ্যম হচ্ছে রোগ নির্ণয় বিভাগে সেবার সময় বাড়ানো। কিন্তু দক্ষ জনবল সরকারি খাতে কাজ না পেয়ে বেসরকারিখাতে সেবা দিচ্ছে। তিন শিফট চালু হলে অধিক সংখ্যক দক্ষ রোগ নির্ণয় জনবল নিশ্চিতের মাধ্যমে অধিক খরচের বেসরকারি সেবার নির্ভরতা কমবে। সরকারি সেবা গ্রহীতা বাড়বে ও রাজস্ব আয় বাড়বে, ভর্তুকি কমবে। ফলে সঠিক রোগনির্ণয়ে প্যাথলজিস্ট, ডিপ্লোমা ও বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ চিকিৎসা সহায়ক জনবলের পদ সৃষ্ট ও নিয়োগদান জরুরি। একই সঙ্গে মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন করে জব রেজিস্ট্রেশন এবং পরিদপ্তর গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
