অবশেষে নিয়োগবিধি পেল রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নিবন্ধন অধিদপ্তরের ইতিহাসে বড় সুখবর। অবশেষে প্রথমবারের মতো নিজস্ব নিয়োগবিধি পেলেন রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে সোমবার নিবন্ধন অধিদপ্তর (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫ নামে গেজেট প্রকাশ করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
এদিকে এই নিয়োগ বিধিমালা জারির মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীনের ৫৪ বছরসহ রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের দীর্ঘ ইতিহাসে বড় একটি সাফল্যের পালক যুক্ত হলো, যা বছরের পর বছর প্রত্যাশা করে আসছিলেন এ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মাধ্যমে নিরসন হবে নানা জটিলতার। সাব-রেজিস্ট্রাররা পদোন্নতি পাবেন একেবারে শীর্ষপদ আইজিআর পর্যন্ত। যা বছরের পর বছর প্রত্যাশা করে আসছিলেন এ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এছাড়া এ বিধিমালা জারির ফলে সাবরেজিস্ট্রারদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি ছাড়াও পদোন্নতির নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। নিবন্ধন অধিদপ্তরের শীর্ষ পদ (আইজিআর) পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিশ্চিত হলো। নতুন করে অ্যাডিশনাল আইজিআর এবং ডিআইজিআর পদও সৃষ্টি হয়েছে। আইআরও/এআইজিআর পদ বেড়ে ১৭টি হয়েছে। এছাড়া বিধিমালার মধ্যে প্রতিটি পদের সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।
বিআরএসএ-এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
বিধিমালা জারিকে আইন মন্ত্রণালয়ের বড় সাফল্য অভিহিত করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিআরএসএ)। সংগঠনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামীলুর রহমান ও মহাসচিব মাইকেল মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে এই বিধিমালা জারি হয়েছে। এরফলে ধীরে ধীরে পুরো রেজিস্ট্রেশন বিভাগে সেবার মান আরও বাড়বে। এছাড়া দীর্ঘদিনের পদোন্নতির জটও খুলবে। বলা হয়, বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের পেছনে উপদেষ্টা ছাড়াও বিশেষভাবে ভূমিকা রেখেছেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা, অতিরিক্ত সচিব এসএম এরশাদুল আলম, যুগ্মসচিব (প্রশাসন-২) আজিজুর রহমান, যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মাহবুবুর রহমান, নিবন্ধন অধিদপ্তরের আইজিআর আবদুল হান্নান (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ), উপসচিব (রেজিস্ট্রেশন) হাসান মাহমুদুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী সচিব আজিজুর রহমান।
অপরদিকে রেজিস্ট্রেশন সার্ভিসের সিনিয়র সদস্য হিসেবে এ বিষয়ে শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখেন রাজবাড়ি জেলা রেজিস্ট্রার শেখ কাওছার আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খান, মানিকগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মো. জাহিদ হোসেন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা সাবরেজিস্ট্রার এসএস শফিউল বারি, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের সাবরেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদ, গাজীপুর সদরের সাবরেজিস্ট্রার আবুল বাতেন, ডেমরা সাবরেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম, এবং ঢাকা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
বিধিমালায় যা আছে
জারিকৃত বিধিমালায় নিয়োগ পদ্ধতি, সরাসরি নিয়োগ, পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ, শিক্ষানবিশ, বিশেষ বিধান ও রহিতকরণ ও হেফাজত নামে ৬টি বিধি এবং এরমধ্যে প্রয়োজনীয় উপবিধি রয়েছে। এতে বলা হয়, এই বিধিমালা জারির ফলে গেজেটেড অফিসার্স (রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট) রিক্রুটমেন্ট রুলস, ১৯৭৯ রহিত বলে গণ্য হবে। তবে রহিত হওয়া রুলসের অধীনেই নিয়োগকৃত ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়োগ ও পদোন্নতি পেয়েছেন বলেও গণ্য হবে।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী নিয়োগ হবে সরাসরি, পদোন্নতি ও প্রেষণে বদলি বা পদায়নের মাধ্যমে। এছাড়া নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত বাছাই ও লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করবে।
এদিকে বেশির ভাগ পদে নিয়োগ হবে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ। তবে কয়েকটি পদে পদোন্নতির জন্য কিছু কোটা রাখা আছে। বাকি পদে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হবে। এই সার্ভিসের শীর্ষ পদের নাম মহাপরিদর্শক, নিবন্ধন (আই,জি.আর)। পদটি পূরণ হবে পদোন্নতির মাধ্যমে। তবে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে প্রেষণে বদলির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া পদগুলো হলো অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, উপ-মহাপরিদর্শক, সহকারী মহানিবন্ধন পরিদর্শক ও জেলা রেজিস্ট্রার প্রভৃতি। এখানে জেলা রেজিষ্টার হতে হলে সাবরেজিষ্টার পদে কমপক্ষে ৭ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা লাগবে। এভাবে ধাপে ধাপে অভিজ্ঞতার সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে।
সাবরেজিস্ট্রারের ৯৫ ভাগ পদে নিয়োগ হবে সরাসরি এবং বাকি ৫ ভাগ পদে পদোন্নতি মাধ্যমে। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে ৭ বছর, অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী বা সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কমপক্ষে ১২ বছর এবং জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের প্রধান সহকারী বা অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী পদে কমপক্ষে ১৫ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি।
বিস্তারিত দেখুন-

