Logo
Logo
×

জাতীয়

যুগান্তরের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নির্বাচনের পূর্বশর্ত

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম

রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নির্বাচনের পূর্বশর্ত

ছবি: যুগান্তর

ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে অনৈক্য ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেনি গত বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এদিকে নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ নানা ইস্যু নিয়ে বিভেদ বাড়ছে একসময়ের দুই মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। সবমিলিয়ে দেশের রাজনীতি এখন চরম অস্থিতিশীল সময় পার করছে।

আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা জরুরি। সে বিষয়টিকে ভাবনায় রেখেই শনিবার (২৫ অক্টোবর) ‘রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা : নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে দৈনিক যুগান্তর। দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ‘ন্যূনতম সমঝোতার’ ভিত্তিতে হলেও রাজনীতিতে স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন। তারা প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে বলেন, রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নির্বাচনের পূর্বশর্ত। 

গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাজনৈতিক অঙ্গন স্থিতিশীল হলে যেমন তা নির্বাচনে সহায়ক হবে, একইভাবে স্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসতে পারে নির্বাচনের মাধ্যমে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, যদি সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা থাকে, তাহলে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, রাজনীতির ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন যুদ্ধে পরিণত না হয়।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পরিণাম ভয়াবহ। অতীত আমাদের এ শিক্ষা দিয়েছে। রাজনীতিতে স্থিতিশীলতাকে নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, রাজনীতিতে স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন ন্যূনতম সমঝোতা। এক্ষেত্রে ‘বড় দল’ হিসেবে বিএনপিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার তাগিদ দেন তিনি।

রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার মূলে ‘ক্ষমতার দ্বন্দ্ব’ কাজ করছে বলে মত আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর। তার ভাষায়, ভাগে কে বেশি পাবে আর কে কম, সেটা নিয়েই মূলত দ্বন্দ্ব চলছে।

দেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা যে কোন মাত্রায় বিরাজ করছে সেটির ‘চিত্র’ কিছুটা ফুটে ওঠেছে গোলটেবিল আলোচনাতেও। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বক্তব্যর সময় প্রতিবাদ জানান এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। তাদের মধ্যে হঠাৎ বাগবিতণ্ডায় উত্তপ্ত হয় আলোচনার টেবিল।

তবে দিনশেষে আলোচকরা সবাই মোটাদাগে এ বিষয়ে একমত হন যে, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে নানা বিষয়ে অনৈক্যের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতিসহ সার্বিকভাবে দেশের ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই নির্বাচনের আগেই আলোচনার মাধ্যমে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান আলোচকরা।

যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে ও প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কামরুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য কামাল হোসেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এইচ আর এম রোকন উদ্দিন ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এ কে এম শামসুদ্দিন।

গোলটেবিল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, সম্পাদকীয় ও ফিচার বিভাগীয় প্রধান হাসান শরীফ, সহযোগী সম্পাদক মাহবুব কামাল, অনলাইন ইনচার্জ আতাউর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি কাজী জেবেল, তহুর আহমেদ, মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মোরশেদ আলম প্রমুখ।  

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম