Logo
Logo
×

জাতীয়

ছাত্ররাই গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি: রাষ্ট্রদূত মুশফিক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ এএম

ছাত্ররাই গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি: রাষ্ট্রদূত মুশফিক

বাংলাদেশ-মেক্সিকো সম্পর্ক নিয়ে ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন। ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকো সিটিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে শুক্রবার লাতিন আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব মেক্সিকোর (ইউনাম) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে গণতান্ত্রিক রূপান্তর, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশ-মেক্সিকো সম্পর্ক নিয়ে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন আয়োজন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট এবং ভবিষাৎ গণতান্ত্রিক যাত্রায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকাকে তুলে ধরেন মেক্সিকোয় নিযুক্ত সিনিয়র সচিব মর্যাদায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি বলেন, আমি তোমাদের মাঝে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক-এমনকি ভবিষ্যতের কোনো জাতিসংঘ মহাসচিবকেও দেখতে পাচ্ছি। তোমরাই বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে, আর সেই নেতৃত্বের কেন্দ্রে থাকতে হবে মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদাকে।

গত আগস্টে বাংলাদেশে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি ছিল একটি যুগান্তকারী অধ্যায়। ছাত্র সমাজ-যারা তোমাদের বয়সি-গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা এবং মানবিক মর্যাদার দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল। তিনি বলেন, স্বৈরাচারকে হটানোর আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্র, নারী শিশুসহ প্রায় ১৪০০ নাগরিককে জীবন দিতে হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে এসব পরিবর্তনের সংযোগ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত আনসারী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি মূলত সমতা ও সমমর্যাদার বন্ধুত্বের ভিত্তিতে দাঁড়ানো। আমরা অগ্রাধিকার দিই শান্তি, বহুপাক্ষিকতা, জলবায়ু, ন্যায়বিচার এবং শ্রমজীবী মানুষের অধিকারকে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও একাডেমিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে মেক্সিকো বাংলাদেশের জন্য একটি উদীয়মান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

এর আগে কাউন্সেলর আবদুল্লাহ আল ফরহাদ একটি মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো, জনমিতিক শক্তি এবং উন্নয়ন অর্জনের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান, অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল রূপান্তর এবং জলবায়ু সহনশীলতার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের নেতৃত্ব, বৈশ্বিক জলবায়ু কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা এবং ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা সংকটসহ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে।

বাংলাদেশ-মেক্সিকো সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়েও বিস্তৃত আলোচনা হয়। বহুপাক্ষিক সহযোগিতা, জলবায়ু উদ্যোগ, মাইগ্রেশন গভর্ন্যান্স, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলোকে সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিশেষ করে ইউনাম ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একাডেমিক বিনিময় ও যুব আদান-প্রদানকে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

সফরের শেষে একটি প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও অর্থনৈতিক কূটনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করে। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে এক সংক্ষিপ্ত রিসেপশনে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্রদূত আনসারী তাদের প্রত্যেককে বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কিত বই এবং ঐতিহ্যবাহী কাঁচশিল্পসহ স্মারক উপহার প্রদান করেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম