৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে হবে প্রচার সামগ্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি নির্বাচনের বিস্তারিত তফশিল জানান।
এতোদিন নির্বাচন আমেজ ধারণ করে যেসব প্রার্থী ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড টাঙিয়েছেন, সেগুলো আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী বা সংশ্লিষ্টদের সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছে নাসির উদ্দিন কমিশন।
গতকাল ১০ ডিসেম্বর ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তফশিল ঘোষণার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ওই নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড, গেট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী ও নির্বাচনী ক্যাম্প থাকলে তা সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য প্রার্থী/ব্যক্তিদের তফশিল ঘোষণার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন।
ইসি জানায়, নির্ধারিত সময়ে উপযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীসমূহ অপসারণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো।
আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসীর উদ্দিন আহমেদ জানান, আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ভোট উৎসব হবে। এদিন ৩০০ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোট হবে।
সিইসি আরও জানান, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি।মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল ১১ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে ২১ জানুয়ারি এবং ওইদিন প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। নির্বাচনি গণসংযোগ ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তথা নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত। ভোট ১২ জানুয়ারি।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ থেকে তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৮ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ২০ দিন সময় রয়েছে।
জুলাই অভ্যত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাত্র দুই বছরের মাথায় এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়। এ সরকারের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে ২০২৫ সালের ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দেন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে। পরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের সিদ্ধান্ত হয়। ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে। ওই ঘোষণার সময়সীমার মধ্যে এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে এটিই প্রথম নির্বাচন। নির্বাচন পরিচালনায় ‘অনভিজ্ঞ’ এই অন্তর্বর্তী সরকার ও ইসির অধীনে একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হতে যাচ্ছে।

