Logo
Logo
×

জাতীয়

ঘুস দিয়ে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ

টিউলিপসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট অনুমোদন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৮ পিএম

টিউলিপসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট অনুমোদন

যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক। ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানে একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’ করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুস’ হিসাবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনার বোন শেখা রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র বা চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা সরদার মোশারফ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন। 

দণ্ডবিধির ১২০বি/৪০৯/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭এর ৫(২) ধারায় এদিন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মুর্তজা আলী সাগর শিগগির আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন। এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল অবৈধ সুবিধা নিয়ে ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশারফ হোসেনকে আসামি করা হয়। 

বৃহস্পতিবার চার্জশিট অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, এজাহারভুক্ত আসামি হিসাবে রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামানের নাম থাকলেও এ সংক্রান্ত আপিল কেস পেন্ডিং থাকায় আপাতত তাকে বাদ দিয়ে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৬৩ সালে তৎকালীন বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী গুলশানে ১ বিঘা ১৯ কাঠা ১৩ ছটাক আয়তনের একটি প্লট বরাদ্দ পান। 

সরকারি ইজারা চুক্তি অনুযায়ী, ৯৯ বছরের মধ্যে ওই প্লট হস্তান্তর বা ভাগ করে বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। তবে ১৯৭৩ সালে তিনি মো. মজিবুর রহমান ভূঁইয়াকে আমমোক্তার মাধ্যমে প্লটটি হস্তান্তর করেন। এরপর প্লটটি ভাগ হয়ে বিক্রি হয় এবং ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ শুরু হয়। জহুরুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার সন্তানদের মধ্যে বিরোধ শুরু হলে মামলা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, মামলা চলমান অবস্থায় এবং হস্তান্তর নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় রাজউকের সংশ্লিষ্ট আইন উপদেষ্টারা ইস্টার্ন হাউজিংকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন দেন-যা অবৈধ ছিল। কারণ কোম্পানিটি লিজ হোল্ডার বা বৈধ প্রতিনিধি ছিল না। রাজউকের রেকর্ড অনুযায়ী, ৯৯ বছরের ইজারার শর্তে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে প্লট হস্তান্তর করার সুযোগ নেই। তবুও ইস্টার্ন হাউজিংকে আমমোক্তার করে ওই প্লট ভাগ করে ৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ ও হস্তান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়। ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে ‘অবৈধভাবে’ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হয় এবং এর বিনিময়ে টিউলিপ সিদ্দিক ‘অবৈধ পারিতোষিক’ হিসাবে ইস্টার্ন হাউজিং থেকে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন। এজাহারে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে ইস্টার্ন হাউজিংকে আমমোক্তার অনুমোদনপূর্বক ও ফ্ল্যাট বিক্রয়ের অনুমোদন করিয়ে অবৈধ সুবিধা দিয়ে ও নিজে অবৈধ সুবিধা নিয়ে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। 

দুদক জানায়, অবৈধ সুবিধা নেওয়ার প্রমাণ হিসাবে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের পত্রে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন মর্মে উল্লেখ আছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯/০৫/২০০১ তারিখ থেকে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ওই ফ্ল্যাটটির দখলে ছিলেন। তিনি তার ২০১৫-২০১৬ করবর্ষে ফ্ল্যাট নং-B/201, plot no#NE(A)-11B, Gulshan, Dhaka তার ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিককে হেবা করা হয়েছে বলেও প্রমাণ মিলেছে। আর ফ্ল্যাটটি এখনো তার নামে নামজারি রয়েছে এবং তিনিই হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম