Logo
Logo
×

জাতীয়

মাহফুজ-আসিফ কোন দলে যাচ্ছেন, যা জানা গেল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

মাহফুজ-আসিফ কোন দলে যাচ্ছেন, যা জানা গেল

মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। দুজনই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। 

শুক্রবার সকালে ফেসবুক পোস্টে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন। আর মাহফুজ লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে ভোট করতে চান।

তারা কোনো দলে যোগ দেবেন, নাকি দুজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছু জানাননি মাহফুজ। যদিও পদত্যাগ করার আগে থেকেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে তাদের দেন-দরবার চলছিল বলে সরগরম ছিল। এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ তাদের দলে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একাধিক নেতা বলেন, শেষপর্যন্ত আসিফ ও মাহফুজ তাদের সঙ্গেই যোগ দেবেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দুজনেই গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে দেনদরবার করছেন বলে জানা গেছে। 

তাদের ব্যাপারে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সব সহযোদ্ধাকে আমরা এনসিপিতে চাই। কিন্তু তাদেরও ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে, তারা যেকোনো দলে যেতে পারেন।

এদিকে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গণমাধ্যমকে বলেন, তারা অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের গঠিত দলে আসবেন। তবে সরকারি দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে তারা কয়েকদিন সময় নিচ্ছেন। কয়েকদিনের মধ্যে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।

অন্যদিকে এদিকে আসিফ মাহমুদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, আসিফ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি, হয়তো শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবেন। 

তিনি আসিফের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, দায়িত্বে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে বা কিছু ভুল করে থাকেন। তবে তার কাছে সংগ্রামের অবদানে আসিফের সেসব ভুল তুচ্ছ। 

নুর আরও বলেন, আসিফ হঠাৎ গজিয়ে ওঠা বা ২০-২৫ দিনের আন্দোলনের কোনো নেতা নয়। আসিফ ফ্যাসিবাদের উত্তাল সময়ে রাজপথের সংগ্রাম থেকে গড়ে ওঠা নেতা, রাজপথে আমার সংগ্রামের সারথি। 

এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক সময় আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং তার সঙ্গে আমাদের সখ্য রয়েছে। তিনি পদত্যাগ করার আগের দিনও তার সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ আসার ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চান। সেক্ষেত্রে তার যোগ্যতা ও মর্যাদা অনুযায়ী তাকে সম্মানিত করা হবে। 

রাশেদ আরও বলেন, আন্দোলন সংগ্রমে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের তিনি নায়ক। তিনি চাইলে যে কোনো দলে যোগদান করতে পারেন। অথবা নতুন দলও গঠন করতে পারেন। সেই স্বাধীনতা তার রয়েছে। যেহেতু আমরা একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, আমাদের সঙ্গে তার সখ্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে গণঅধিকার পরিষদে আসলে তার জন্য ভালো হবে। তিনি সহজে আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন। যেটি অন্য দলের ক্ষেত্রে তার জন্য কঠিন হবে। তিনি যদি চান গণঅধিকার পরিষদে আসতে পারেন। তার জন্য গণঅধিকার পরিষদের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে।

রাশেদ খান আরও বলেন, তিনি (আসিফ) উপদেষ্টা ছিলেন, সরকারে থাকলে সমালোচনা হয়। বয়স তো খুব বেশি না, এই বয়সে বেশ কিছু ভুল-ভ্রান্তি করেছেন। আমরা মনে করি বয়স বাড়ার সঙ্গে তার ভেতরে পরিপক্কতা বাগড়বে। বুঝবেন, দেখবেন, শিখবেন। তার ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা এই মুহূর্তে সমীচীন নয়।

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে রাশেদ বলেন, আসিফ মাহমুদের জন্যই ৬ আগস্টের কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট করা হয়। এই সাহসী ভূমিকা ছিল তার। যে সিদ্ধান্তের কারণে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হয়। তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা দেখানো উচিৎ।

তবে মাহফুজের ভাই ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম বলেছেন, মাহফুজ লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। তবে তিনি কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তার এনসিপিতে আসা কিংবা স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

তবে কোন দলে যোগ দেবেন তা নিয়ে এখনও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেননি মাহফুজ আহমেদ ও আসিফ মাহমুদ।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম