Logo
Logo
×

জাতীয়

গণভোটের ব্যালট পেপার হবে গোলাপী, ফেলতে হবে একই বক্সে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম

গণভোটের ব্যালট পেপার হবে গোলাপী, ফেলতে হবে একই বক্সে

ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট এবং গণভোটের ব্যালট একই বাক্সে ফেলতে হবে। গণভোটের ব্যালট হবে গোলাপী। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট সাদা হলেও গণনার সুবিধার্থে গণভোটের ব্যালটের রঙ হবে গোলাপী। এছাড়া গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট একই বক্সে ফেলা হবে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় গণভোটের প্রশ্ন, ভোটদানের সময়, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নির্ধারণ, ফলাফল প্রকাশসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসি এই পরিপত্র জারি করে।

গণভোটের বিষয়

প্রশ্ন: 'জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি ভোটারগণ সম্মতি জ্ঞাপন করেন কি না (হ্যাঁ/না) সেই বিষয়ে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। 

ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ. আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।

গ. সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল হতে ডেপুটি স্পীকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাসহ তফসিলে বর্ণিত যে ৩০টি বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্য হয়েছে- সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য থাকবে।

ঘ. জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অপরাপর সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

গণভোট অনুষ্ঠানের সময়সূচি ও গণবিজ্ঞপ্তি

গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের সময়সূচি উল্লেখ করে ১১ ডিসেম্বর একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিন অর্থাৎ আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একই সঙ্গে বিরতিহীনভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক যেসব রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ ও অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করা হবে, সেসব রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন। একইভাবে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে যেসব প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা নিযুক্ত হবেন সেসব প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে নিযুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা একইসঙ্গে একই সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

ভোটকেন্দ্র, ভোটার তালিকা ও ভোটার

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ভোটকেন্দ্র, গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত ভোটার তালিকা হবে গণভোটের ভোটার তালিকা এবং ওই তালিকাতে উল্লিখিত ভোটাররা গণভোট প্রদানের অধিকারী হবেন। অর্থাৎ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সহকারী রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক প্রিসাইডিং অফিসারের কাছ থেকে সরবরাহকৃত প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের জন্য ভোটদানের অধিকারী ভোটারগণের তথ্য সম্বলিত ভোটার তালিকা গণভোটের ভোটার তালিকা হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ভিন্ন রঙের ব্যালটে অনুষ্ঠিত হবে। গণভোটের ব্যালট (ফরম-১) গোলাপি রঙের হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত, নির্ধারিত এবং সরবরাহকৃত স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সই গণভোটের ব্যালট বাক্স হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ভোটাররা ভোট প্রদান শেষে জাতীয় সংসদের ব্যালট ও গণভোটের ব্যালট একই বাক্সে ফেলবেন।

পোস্টাল ভোট

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২৭ দফা (১) এর উপ-দফা (ক) বা (খ) বা (গ) বা (ঘ) তে উল্লিখিত বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভোটার ও দেশে অবস্থানরত নির্দিষ্ট ভোটাররা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট এ ভোটদান করবেন। গণভোটের জন্য পোস্টাল ব্যালট (ফরম-২) ব্যবহৃত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে যোগ্য ব্যক্তিগণ যে পদ্ধতি অবলম্বনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, গণভোটের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসৃত হবে।

ভোটদান পদ্ধতি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে একইসঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারের সঙ্গে গণভোটের একটি ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হবে এবং গণভোটের ব্যালট পেপারে হ্যাঁ বা না-তে সিল দিয়ে ব্যালট পেপার ভাঁজ করে নির্ধারিত ব্যালট বাক্সে ফেলবেন। পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে, ভোটার গণভোটের পোস্টাল ব্যালট পেপারে (ফরম-২) হ্যাঁ বা না এর পাশে ফাঁকা ঘরে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে প্রদান করে তার ভোট বা মত প্রকাশ করবেন।

ভোটার কর্তৃক ভোটদানের প্রক্রিয়া

ভোটার ব্যালট পেপার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যালট পেপার চিহ্নিত করার জন্য নির্ধারিত গোপন কক্ষে যাবেন। যে প্রশ্নটিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সে প্রশ্নে হ্যাঁ-সূচক বা না-সূচক ভোটদান করতে চাইলে একজন ভোটার ব্যালট পেপারে মুদ্রিত হ্যাঁ-সূচক ঘরে বা না-সূচক ঘরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সরবরাহকৃত সিলমোহর দ্বারা নিজ ভোট প্রদান করবেন। ভোট প্রদানের পর ভোটার ব্যালট পেপারটি ভাঁজ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালটের সঙ্গে নির্ধারিত স্থানে রক্ষিত ব্যালট বাক্সে তা প্রবেশ করাবেন।

ভোটগ্রহণ সমাপ্তির পর

ভোটগ্রহণ সমাপ্তির অব্যবহিত পর প্রিসাইডিং অফিসার ভোটকেন্দ্রে বা পোস্টাল ভোটের গণনা কেন্দ্রে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে নিয়োজিত এজেন্টদের উপস্থিতিতে (যদি থাকে) প্রত্যেকটি ব্যালট বাক্স খুলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ও গণভোটের ব্যালটগুলো আলাদা করবেন। অতঃপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালটগুলো প্রার্থী ভিত্তিক এবং গণভোটে ভোটদানকৃত হ্যাঁ সূচক ও না সূচক ব্যালট পেপারগুলো পৃথক করে গণনা করবেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম