Logo
Logo
×

জাতীয়

শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিচার শুরু

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫১ পিএম

শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিচার শুরু

ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, শাইখ মাহদীসহ অন্যরা। গ্রেফতার ও পলাতক আসামিদের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।

এদিন প্রথমেই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের আইনজীবীদের করা অব্যাহতি আবেদন খারিজ করেন। এরপর সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একইসঙ্গে গ্রেফতার আসামিদের একে একে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। এই পর্ব শেষ হলে আদালত সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করবেন। ন্যূনতম ২১ দিনের মধ্যে এটি হবে।

সকাল থেকেই ঢাকার ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব, বিজিবি ও সেনা কর্মকর্তারা। সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে ১০ জন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। 

তাদের মধ্যে ছিলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

এ মামলায় শেখ হাসিনা সহ সাতজন এখনও পলাতক। তারা হলেন- শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, র‌্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।   

গুমের এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের দিন ২১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আসামিদের পক্ষে আইনজীবীর আবেদনের কারণে আদেশ দুইদিন পিছিয়ে ২৩ ডিসেম্বর হয়েছে। প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই বিলম্বের বিরোধিতা করেছেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর গ্রেফতার তিন আসামির পক্ষে আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের হয়ে তাবারক হোসেন শুনানি করেন। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও ব্যক্তিগত আইনজীবীরা শুনানি পরিচালনা করেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে গাজী এমএইচ তামিম অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন করেন।

এর আগে, ৩ ডিসেম্বর চিফ প্রসিকিউটর অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করেন। তিনি টিএফআই সেলের বীভৎসতা ও গুমের অন্ধকার তুলে ধরেন এবং উল্লেখ করেন, ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে।

গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালত তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং পলাতক আসামিদের জন্য হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর ১৭ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম